ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলী ইমাম খান অনুর তার স্ত্রী সায়মা পারভীনকে তানহা (২০) হত্যা করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। জানা গেছে, বাসা থেকে ডেকে এনে ছুরিকাঘাতে সায়মাকে হত্যা করেন তিনি।
আলী ইমাম তার ফেসবুক আইডির এক স্ট্যাটাসেও স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করেন। বলেন, ‘আমার বউ পরোকিয়ায় আসক্ত হয়েছিল, তাই নিজেই তাকে খুন করেছি।…’ পরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
আজ সোমবার (১৫ মে) ঝালকাঠি ইকো পার্ক থেকে সায়মার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সায়মা পারভীন তানহা ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সে শহরের টিনপট্টি সড়কের শাহাদাত তালুকদারের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, ঝালকাঠি শহরের ফকিরবাড়ি এলাকার দলিল লেখক দিদার হোসেন নান্নার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলী ইমাম খান অনু ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর গোপনে বিয়ে করে প্রতিবেশী সায়মা পারভীন তানহাকে। বিয়ের পরে তারা আলাদাভাবে নিজের বাবার বাসায় থাকত। সম্প্রতি মেয়েটি ফেসবুকে অন্য এক যুবকের সঙ্গে চ্যাটিং করত। বিষয়টি জানতে পারে অনু রবিবার রাতে নিজের ফেসবুকে স্ত্রী পরোকিয়ায় আসক্ত লিখে স্ট্যাটাস দেয়। আজ সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্ত্রীকে ফোনে ইকো পার্কে ডেকে আনে অনু। এরপর ফেসবুকের স্ট্যাটাস ও চ্যাটিং নিয়ে দুজনের মধ্যে কথার কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অনু ছুরি দিয়ে স্ত্রীর পেটে ও বুকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে অনু তাঁর ফেসবুকে বেলা ১২টার দিকে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
অনু তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আমার বউ পরোকিয়ায় আসক্ত হয়েছিল, তাই নিজেই তাকে খুন করেছি। এর জন্য আমি ছাড়া আর কেউ দায়ি নয়।’
অপর একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘বিশ্বাস ঘাতক বেইমানের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। পরপারে ভালো থেকো বউ, পরকীয়ার মজা এইবার অন্তত বুঝলা।’
সায়মা পারভীনকে তানহার বাবা শাহাদাত হোসেন তালুকদার বলেন, ‘আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার পরপরই অনু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অনুকে আটক করা হয়েছে।’