সিন্ধুর পানি চুক্তি সংশোধনে পাকিস্তানকে নোটিশ ভারতের

সিন্ধু নদের পানি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে চুক্তি রয়েছে, তা ৬২ বছরের পুরোনো। ভৌগোলিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই নদের সিংহভাগ পানি ব্যবহার করে পাকিস্তান। তাই পুরোনো চুক্তি পর্যালোচনা এবং সংশোধন চায় ভারত।

এবার আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে নোটিশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় সিন্ধু পানিচুক্তি সই করে ভারত ও পাকিস্তান।

চুক্তি অনুযায়ী, বিতস্তা ও চন্দ্রভাগার জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ৮০ শতাংশ, ভারতের ২০ শতাংশ। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত ওই জল ব্যবহার করলেও তা আটকাতে পারবে না পাকিস্তান। কিন্তু কিষেণগঙ্গা এবং রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে ভারত পানি আটকে দিচ্ছে বলে ২০১৬ সালে অভিযোগ করে পাকিস্তান। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতেরও দ্বারস্থ হয় তারা।

অন্যদিকে ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের পদক্ষেপ সিন্ধু পানিচুক্তির নবম ধারার লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে চুক্তি সংশোধনের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ১৯৬০ সালের চুক্তি মতে শতদ্রু, বিপাশা, রবি নদীর পানি ব্যবহার করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ভারতের। আর সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার অধিকাংশ জলের ভাগ পেয়েছে পাকিস্তান। তবে ওই নদীগুলিতে শর্তসাপেক্ষে বাঁধ তৈরি করতে পারে ভারত। সেইমতো জম্মু-কাশ্মীরে ঝিলম নদীতে কিষেণগঙ্গা ও চন্দ্রভাগায় রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলেছে ভারত। আর এতে প্রবল আপত্তি ইসলামাবাদের।

এদিকে বুধবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিন্ধুর পানি চুক্তি সংশোধনের জন্য ২০২৩ সালেও ইসলামাবাদকে নোটিশ পাঠিয়েছিল দিল্লি। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে আন্তঃসীমান্ত হামলা এবং জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কিত উত্তেজনার কারণে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। তার প্রভাব পড়েছে পুরোনো এই চুক্তির উপরও।

ভারত পানিচুক্তির বিষয়ে আইন মেনে চললেও, বাংলাদেশ বিষয়ে উদাসীন। অথচ ভারতের সঙ্গে ৫৪টি অভিন্ন নদী ভাগাভাগি করে বাংলাদেশ। এসব নদ-নদীগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং জলবায়ুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এতে আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে ভারত তার মতো করেই পানি সুবিধা নিচ্ছে বছরের পর বছর। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় নতুন করে এ দাবি উঠেছে, দিল্লিকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে পানি ছাড়তে হবে।