নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ওসি আবু বকর সিদ্দিক যোগদানের পাঁচ মাসের মধ্যে থানা এলাকায় কমেছে চুরি, ছিনতাই, জুয়া মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং জঙ্গিবাদসহ অপরাধ মূলক কর্মকান্ড। সেই সাথে বেড়েছে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা।জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ বিভিন্ন কাজের বিশেষ অবদান রাখায় যোগদানের প্রথম মাসেই ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক।
অপরাধ দমনের মাধ্যমে সিদ্ধিরগঞ্জে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করে একজন কৌশলী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আবু বকর সিদ্দিক পরিচিতি পেয়েছেন। সন্ত্রাস, মাদক, জুয়া, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, চোরাচালান, পারিবারিক কলহসহ বিভিন্ন অপরাধ ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেবাপ্রার্থীদের সহযোগিতা করছেন।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে আবু বকর সিদ্দিক ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। থানায় যোগদানের পরপরই তার কিছু ব্যতিক্রম উদ্যোগে পাল্টে যায় শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ থানা সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার দৃষ্টিপট। তিনি যোগদান করেই থানাকে ঘুষ ও দালালমুক্ত ঘোষণা করে সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশি সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ শুরু করেন। তার পাঁচ মাসের চেষ্টায় এ অঞ্চলে সন্ত্রাস ও সামাজিক অপরাধ কমে এসেছে। টাকা পয়সা ছাড়াই মানুষ জিডি অভিযোগ করতে পারছেন।
মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন ওসি আবু বকর সিদ্দিক। জানা গেছে, গত পাঁচ মাসে ওসি আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ প্রায় ৬০-৭০ জন মাদক কারবারি ও মাদকসেবীকে গ্রেপ্তার করে।
আবু বকর সিদ্দিক থানায় যোগদানের পরপরই পুলিশের কর্মকাণ্ডেও পরিবর্তন এনেছেন। আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের দ্বারপ্রান্তে পুলিশের সেবা পৌঁছে দিতে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছেন। কমে গেছে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতাও। শোষিত, নির্যাতিত, সম্পদের ভাগ-বণ্টন, পারিবারিক ছোট-বড় যেকোনো সমস্যায় সাহায্য নিতে থানায় আসা ব্যক্তিদের সততা-নিষ্ঠা ও ধৈর্যের সঙ্গে হাসিমুখে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
থানায় সেবা নিতে আসা আইলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এত সুন্দর মন মানসিকতার ওসি এর আগে আমরা পাইনি। তাকে কখনও পুলিশ মনে হয় না। মনে হয় আমাদের পরিবারেরই একজন। তবে কঠিন এবং কোমল দুটো রূপই তার রয়েছে। অপরাধীদের কাছে তিনি আতঙ্ক।’
আরেক সেবা প্রার্থী হাসান ফেরদৌস বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন সবাই মনে করতেন, থানা মানেই হয়রানি আর ঘুষের কারবার। কিন্তু আমাদের সেই ধারণা এখন পাল্টে গেছে। থানাকে এখন সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা মনে হচ্ছে। এটার কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে বর্তমান ওসি সাহেবের।’
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতিমধ্যে ডাকাতি, ছিনতাই সহ বিভিন্ন কাজে লিপ্ত অনেক অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এলাকাবাসীকে সেবা প্রদান করার জন্য সব সময় প্রস্তুত। মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের ধরতে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পুলিশ অভিযান করছে। সিদ্ধিরগঞ্জে যতদিন আছি ততদিন অপরাধীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করছি। অপরাধী যত বড় প্রভাবশালী হউক অপরাধ করলে ছাড় নাই। মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আমি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় যখন যা বলবেন তখন তা করার জন্য আমি প্রস্তুত আছি।
ওসি আবু বকর সিদ্দিক আরও বলেন মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর প্রতি আহবান থাকবে। পুলিশকে যদি অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয় তাহলে পুলিশ এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারবে। তাহলে এ দেশ একদিন অপরাধ মুক্ত দেশে রুপান্তরিত হবে।