‘সাকিবের সঙ্গে আ.লীগের সম্পর্ক নেই, তার মনোনয়ন চাওয়া হাস্যকর’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে লড়তে মোট তিন আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এর মধ্যে দুটি নিজ জেলা মাগুরা-১ ও ২ আসনের। অন্যটি ঢাকা-১০ এর জন্য। তারকা এই ক্রিকেটারের মনোনয়নপত্র কেনা এখন মাগুরায় টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। চায়ের দোকানে, বিভিন্ন আড্ডায় আলোচনার প্রধান বিষয় এখন এটি। সাকিবের মনোনয়ন ফরম কেনা নিয়ে মাগুরাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত- এ আলোচনা এখন সর্বত্র। তবে রাজনীতিতে সাকিবের এভাবে উড়ে এসে জুড়ে বসাকে ভালো চোখে দেখছেন না সরকার দলীয় রাজনীতিকরা। তারা মনোনয়নের ক্ষেত্রে নেত্রীর বিচক্ষণতার অপেক্ষায় আছেন। শহরের ব্যবসায়ী রুবায়েত ফিরোজ বলেন, ‘সাকিব আল হাসানকে মাগুরার রাজনীতি কেন, কোনও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও দেখা যায়নি। হঠাৎ তিনি মনোনয়নপত্র কেনায় আমাদের কাছে এটি অস্বাভাবিক মনে হয়েছে।’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘দলের জন্য যারা মূল্যবান সময় দিয়েছেন, যারা হাজারও প্রতিকূলতায় দল ছেড়ে যাননি এমন মানুষই দলের প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনও সম্পর্ক নেই। তার পরিবারের কেউ আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। মাগুরার কোনও আসনে সাকিব আল হাসান মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টি হাস্যকর।’মাগুরা-২ আসনে সাকিব আল হাসান মনোনয়নপত্র কেনায় বিস্মিত নির্বাচনি এলাকা শালিখা ও মোহাম্মদপুরবাসী। আড়পাড়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী খোকন বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মাগুরা শহরের লোকেরাই নাকি বিচ্ছিন্ন। সেখানে শালিখা মোহাম্মদপুর এসে নির্বাচনের ইচ্ছে কেন হলো কে জানে।’ শালিখা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শ্যামল কুমার দে বলেন, ‘এখানকার মানুষ সাকিব আল হাসানের সান্নিধ্যে কোনোদিন আসেনি। আর দলের সঙ্গে তার সম্পর্ক তো নেই। নিশ্চয় নেত্রী এমন কোন সিদ্ধান্ত নেবেন না যে জনবিচ্ছিন্ন কেউ দলের মনোনয়ন পাবেন।’ মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য শ্রী বীরেণ শিকদার বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কখনও ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না- এটি আমাদের বিশ্বাস। আর মনোনয়নের বিষয়টি সম্পূর্ণ দলীয় সিদ্ধান্ত। যাকেই মনোনয়ন দিক আমরা নৌকা মার্কার জন্য প্রয়োজন হলে জীবন দেবো।’ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি একদিনের নয়। দীর্ঘদিন ধরে তিলে তিলে তৈরি হয়েছে এই সংগঠন। এখানে যারা নেতৃত্বে থাকেন তারা দীর্ঘদিন সংগঠন এবং মানুষের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। তাই দলের বাইরে থেকে হঠাৎ এসে দলে স্থান পাওয়া খুব কঠিন। তবে আমাদের নেত্রী অত্যন্ত বিচক্ষণ মানুষ। তিনি সবসময়ই ত্যাগী নেতা কর্মীদের পক্ষে থাকেন।’ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ফ ম আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, ‘নেত্রী সব খবরই রাখেন। নিশ্চয় ত্যাগ ও পরিশ্রমের মূল্য তিনি দেবেন। সাকিব আল হাসান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত নেত্রীর বিচক্ষণ মতামতের ভিত্তিতেই হবে।’