সহজ ম্যাচটা কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

একটা জয়ের জন্য কতটা মুখিয়ে ছিল বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডের মতো তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষের সাথেও কষ্টের জয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে তো উড়েই গেলো, তাই চেনা প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েই ছিল বাংলাদেশের অন্যতম টার্গেট। শুরুটাও ছিল সেরকম। ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ফেললেও মিডল অর্ডারে শান্ত-সাকিব, শান্ত-আফিফের জুটিতে ১৫১ রানের টার্গেট দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ের সামনে।

জবাব দিতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৩-৬ রান তুলতেই ৪ উইকেট নেই হয়ে যায় আফ্রিকান এ দলটির। আউট হওয়া চারজনের মধ্যে ছিলেন সম্প্রতি ভয়ংকর হয়ে ওঠা সিকান্দার রাজাও। কিন্তু এরপরেই যেন খেই হারিয়ে ফেলেন সাকিব আল হাসানরা। উইকেটের দেখা তো মিলছিলই না, উল্টো রানরে ফুলঝুড়ি ছিটাতে থাকেন রায়ার্ন বার্ল (২৫ বলে অপরাজিত ২৭) আর শন উইলিয়ামস (৪২ বলে ৬৪)।

শেষ পর্যন্ত লড়াই করে জিম্বাবুয়ে হারল মাত্র ৩ রানের ব্যাবধানে। ধ্বংসের শুরুটা করেছিলেন তাসকিন আহমেদ, এরপর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার ব্যাটনটা তুলে নিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। শুধু তাই নয়, একই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে দারুণভাবে খেলায় ধরে রাখলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সবচেয়ে বড় কথা, ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই সিকান্দার রাজাকে ফিরিয়ে দিলেন মোস্তাফিজ। মিল্টন সুম্বার পর ব্যাট করতে নামা সিকান্দার রাজাকে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মোস্তাফিজ। কোনো রানই করতে পারলেন না রাজা।

এ রিপোর্ট লেখার সময় জিম্বাবুয়ের রান ৬ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৬। ১১ রান নিয়ে শন উইলিয়ামস এবং ১ রান নিয়ে ব্যাট করছেন রেগিস চাকাভা।

এবারের বিশ্বকাপে দল হিসেবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যাই হোক, ব্যক্তি হিসেবে তাসকিন আহমেদ দুর্দান্ত। এখনও পর্যন্ত খেলা তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই প্রথম ওভারে উইকেট নেয়ার নজির গড়লেন তিনি। প্রথম ম্যাচে তো প্রথম দুই বলেই উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম ওভারে।

শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ১৬ রান। শেষ ওভার করার জন্য সাকিব আল হাসান বল তুলে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে। ব্যাটিংয়ে তখন ব্রাড ইভান্স এবং রায়ান বার্ল। প্রথম বলে দিলেন ১ রান। দ্বিতীয় বলে ব্রাড ইভান্স ছক্কা হাঁকাতে গেলেন। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে বলটি তালুবন্দী করে নিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৪ বলে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রান।

তৃতীয় বলটি উইকেটরক্ষকের পেছন দিয়ে বাউন্ডারি মেরে দেন ব্রাড ইভান্স। চতুর্থ বলে দিলেন ছক্কা। ২ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন পড়ে ৫ রান। পঞ্চম বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে মিস করেন ইভান্স। বল ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দিতে মোটেও বিলম্ব করেননি নুরুল হাসান সোহান। ১ বলে প্রয়োজন ৫ রান।

শেষ বলে জিম্বাবুয়ের ব্যাটার ব্লেসিং মুজারাবানি। শেষ বলেও উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক। এবারও স্ট্যাম্পিং। আউট ধরে নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়রাও মাঠ ছেড়ে উঠে যায়। কিন্তু রিপ্লাইতে দেখা যায়, বল স্ট্যাম্পে আসার আগেই বল ধরে ফেললেন নুরুল হাসান সোহান।

থার্ড আম্পায়ার রিভিউ করে দিলেন নটআউট এবং ঘোষণা করলেন নো বল। ফলে এক রান যোগ হওয়ার পাশাপাশি দু’দলকে আবারও মাঠে নামিয়ে আনা হয় এবং ফ্রি-হিট দিয়ে শেষ বলটি করতে বলা হয়। শেষ বলে মুজারাবানি কোনো রান করতে পারেননি।

ব্রিসবেনের দ্য গ্যাবায় স্নায়ুক্ষয়ী এই ম্যাচে বাংলাদেশের করা ১৫০ রানের জবাব দিতে নেমে ১৪৭ রানে থেমে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ফলে ৩ রানে জিতে বাংলাদেশ।