সব জঞ্জাল দূর করে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করবে অন্তর্বর্তী সরকার

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা সবাই অত্যন্ত আশাবাদী- এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব জঞ্জালকে দূর করে দেশে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করবে। যে পরিবেশে সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে।

তিনি বলেন, সংস্কার আমরা চাই। আমরা মানুষের ওপর যাতে অন্যায় অত্যাচার না হয়, সেই অবস্থায় দেখতে চাই। এখানে আর যেন শিশুদের ওপর গুলি করে হত্যা করা না হয়। যে কাজগুলো একটি সুন্দর, সন্ত্রাসবিহীন ভবিষ্যৎ জন্ম নেয়। আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের তালিকা তৈরি করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাব আধুনিক ভিআইপি হলরুমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের সদস্য ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সাহায্যকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

আন্দোলনে নিহত ও আহতদের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার কাছে খুবই হৃদয় বিদারক। আজকে এ অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে একটি ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত হয়েছে। অনেক বাবা এসেছেন যারা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন। তারা জানেন না যে তাদের ছেলে কী কারণে শহিদ হয়েছেন। এখানে অনেকেই আছেন যাদের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। কারও পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এই স্বাধীন দেশে আমাদের এ বিষয়টি দেখতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আজকে ২৪ সালে আমাদেরই দেশে নিজেদের দেশের বিশেষ দলের সঙ্গে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করতে হয়েছে। আজকে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমার মতে তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মানে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। আমাদের মতে তখনই এ ক্ষমতা দেওয়া দরকার যখন মনে হবে সংবিধানে নিয়মের বাহিরে চলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এখন নাই। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায়। তারা চেষ্টা করছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই সমস্ত বিষয়গুলির বিচার করতে। এ অপরাধের যিনি মূল হোতা শেখ হাসিনা, যার নির্দেশে হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ২০১২ সাল থেকে এ জাতীয় হত্যাকাণ্ডগুলো শুরু হয়েছে। আমরা প্রায় ১৫ বছর ধরে এ অবস্থার মোকাবেলা করছি।

শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কতজনকে ব্যবসা হারাতে হয়েছে, জমি হারাতে হয়েছে, চাকরি হারাতে হয়ে- তার হিসাব নেই। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়গুলোর উপলব্ধি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুরসহ জেলা বিএনপি ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যরা।

জেলা বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের সদস্য ও আহতদের মাঝে ১৫ লাখ টাকার সাহায্য তুলে দেন মির্জা ফখরুল।