সন্তানহারা মায়ের কথা রেখে প্রশংসিত যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট

গত ১৯ জুন আদরের সন্তান আরমান হোসেন রুবেল হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের সহায়তা চেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের কাছে। তখন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট সন্তান হারা সেই মাকে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দেন। সেই আশ্বাস রাখলেন দুই দিনের মধ্যে। শনিবার (২২ জুন) রাত ১ টায় মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মিঠানালা ৬ নং ওয়ার্ড মীর হোসেনের নতুন বাড়ি থেকে তার ছেলে রুবেল হত্যায় জড়িত মোক্তার হোসেনকে আটক করে কুমিরা নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

জানা যায়, গত ১২ জুন রাত ৮টার পর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সুফিয়া বাজার থেকে নিখোঁজ হন দশম শ্রেণির ছাত্র আরমান হোসেন রুবেল। এ ঘটনায় রুবেলের পরিবার মিরসরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর ৫ দিন পর অর্থাৎ ১৭ জুন মিরসরাই শিল্প জোনের সাগরপাড়ে সাহেরখালী বেড়িবাঁধ এলাকায় হাত বাঁধা অর্ধগলিত একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে নৌ-পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারের পর পরনের পোশাক দেখে পরিবারের সন্দেহ হলে ডিএনএ টেস্ট করে নিশ্চিত হয় এটি রুবেলের মৃতদেহ। রুবেল চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের আবদুর রাজ্জাক বলী বাড়ীর শামসুদ্দীনের ছেলে। সে খৈয়াছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলো।

এ ঘটনায় রুবেলের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করলেও খুনীরা প্রভাবশালী হওয়ায় থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। যদিও রুবেলের স্কুলের শিক্ষার্থীরা হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে। কিন্তু এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো রুবেলের পরিবার রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা খুনিদের প্রভাবে ভয়ে থাকতো। এমন পরিস্থিতিতে বিচার চাওয়ার সাহসও হারিয়ে ফেলেন তারা। তখন শুধু সন্তানের খুনিদের বিচার চেয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতো রুবেলের মা।

এ বিষয়ে নিহত রুবেলের ভাই বেলাল হোসেন জানান, গত বছরের ১১ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রুবেল বাড়ির পাশের সুফিয়া বাজার এলাকায় একটি দোকানে কেরাম খেলা দেখছিলো। ওই রাতে সে আর বাড়ি ফিরেনি। তবে তার এক বন্ধু রুবেলকে ওই রাতে ফোন দিলে সে জানায় শিল্পনগর এলাকায় গেছে। এরপর আর ফিরে আসেনি। এরপর এ ঘটনায় মিরসরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এরপর আমরা বেড়িবাঁধ এলাকায় হাত বাঁধা অর্ধগলিত একটি মরদেহ পাই। সেটা ডিএনএ টেস্টের পর নিশ্চিত হই এটা রুবেলের দেহ। এরপর আমরা থানায় মামলা করে অনেকের সাথে দেখা করে খুনিদের বিচার চেয়েছি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে এক বছরেও তারা গ্রেফতার হয়নি। পরে আমি আমার মাকে নিয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাড়িতে গিয়ে দেখা করে সহায়তা কামনা করেছি। তিনি প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে জানান দ্রুত খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। দুইদিনের মধ্যে মোক্তার হোসেন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরা দ্রুত গ্রেফতার হবে বলে আশা করি। আমার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট সাহেবকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

মিরসরাই থানা পুলিশ জানান, মিরসরাই থানা পুলিশের সহায়তায় নৌ পুলিশ মোক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় নৌ পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।

এদিকে একজন অসহায় মায়ের আর্তনাদের মূল্য দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।

ফেসবুকে আরএম রুমি নামে একজন লিখেছেন, ‘আপনি আবারও প্রমাণ করলেন মিরসরাইবাসীর ভাগ্য উন্নয়ন এর শেষ ভরসা আপনি।’ বাদশা খান লিখেছেন, ‘নেতার মত নেতা হলে মিরসরাইকে নতুন রূপে রূপকার করতে এক ঘণ্টা সময় লাগবে না। ধন্যবাদ জানাই এলিট ভাইকে।’ এমডি ইউসুফ লিখেন, ‘ইনশাআল্লাহ লিডার আপনার মাধ্যমে একটা সঠিক বিচার হবে। এই মায়ের আহাজারে পুরো ১০ নম্বরের আকাশ বাতাস এক হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ আপনাকে দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুক।’ এমডি নাজমুল হাসান লিখেছেন, ‘আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। দীর্ঘদিন পর মামলাটার একটা গতি এনে দেওয়ার জন্য।’ মাইনুল ইসলাম ডিউক লিখেছেন, ‘বর্ণচোরাদের মুখোশ উন্মোচনে আপনার জুড়ি নেই। অনেক অনেক ধন্যবাদ নেতা।’ জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আপনার আগামীর জন্যে অনেক বেশি শুভকামনা রইল। শ্রদ্বেয় মোর্শেদ এলিট ভাই।’ রোহান বাবু লিখেছেন, ‘এমন ভালো কাজে আপনার সহযোগিতা অব্যাহত থাকুক।’