শেষ রক্ষা হলো না মনা হত্যার প্রধান আসামি জুয়েলের!

ভারতে পালানোর আগেই পুলিশের হাতে আটক

চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও পায়ের রগ কেটে মনা হত্যা মামলায় প্রধান আসামি জুয়েল সহ হত্যায় জড়িত আরো তিন সহযোগীকে আটক করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশ। আসামিরা মনাকে খুনের পরপরই চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার চৈঠপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত চারজন আসামির নাম- মামলার প্রধান আসামি জুয়েল (৩৪), সহযোগী বশির (২৬), সাগর (২৮) ও জুয়েল ওরফে ছোট জুয়েল (২৫)।

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারের কারণে এই হত্যাকান্ড ঘটতে পাওে বলে ধারণা করছেন কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

আসামিদের গ্রেপ্তার ও খুনের রহস্য জানাতে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগর পুলিশের দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এ সময় দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘জুয়েল ও মনা আগে একত্রেই বিভিন্ন অসামাজিক ও অপকর্ম কওে বেড়াতো। পরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মতের অমিল দেখা দিলে তারা আলাদা দুইটি গ্রুপ তৈরি করে। এরপর এলাকায় আধীপত্য বিস্তারের জেরেই তারা মনার ওপর হামলা করে এবং তাকে হত্যা করে। হত্যার পরপরই আসামিরা চট্টগ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিল।’

তিনি আরো বলেন, মনা নিজেও একটি কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান ছিলেন। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামি। ২০২৩ সালের ৯ জুলাই দিনদুপুরে রিয়াজউদ্দিন বাজারের রয়েল টাওয়ারের সামনে প্রায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাকে আমরা আটক করেছিলাম।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুলাই রাতে মনাকে খুনের পর প্রধান আসামি জুয়েল সহ বশির, সাগর ও ছোট জুয়েল ঢাকা চলে যায়। সেখান থেকে ফকিরাপুল এলাকার এক বাসিন্দার মাধ্যমে তারা অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ৮ জুলাই ফকিরাপুলে ওই ব্যক্তির বাসায় অবস্থান করে পরদিন বিকেলে হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা করে। সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও জানা যায়, ভাতের হোটেলের ব্যবসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জেরে পূর্ব মনাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মনার বাবা শাহ আলম গ্রেপ্তারকৃত জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন। হত্যাকান্ডের পরপরই পুলিশ সজীব ও ফরহাদ নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার তথ্য অনুযায়ি, মনা রবিবার রাতে পোষা বিড়ালের খাবার কিনতে রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাখি গলিতে গিয়েছিলেন। তখন জুয়েলসহ অন্যরা মনাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে জুয়েল, সাগর, বশির ও শাকিল তাকে ছুরিকাঘাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেন।