চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বাস স্ট্যান্ড চত্বরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের উদ্যোগে শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় করা হয় এই আয়োজন। যেখানে মাজার-মসজিদসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শহীদ ফারুকী হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারসহ ১১ দফা দাবি পেশ করেন বক্তারা।
এর আগে সুন্নি আলেমদের নেতৃত্বে বের করা হয় এক বর্ণাঢ্য রেলি। সাধারণ জনতার অংশগ্রহণে রেলিটি হাটাজারী বাস স্ট্যান্ড চত্বর সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে।
শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ সোলাইমান আনছারীর সভাপতিত্বে উক্ত সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মো. ফরিদ উদ্দীন। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন উপজেলা প্রধান সমন্বয়ক এড. সৈয়দ মোখতার আহমদ ছিদ্দিকীর ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাওলানা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তাহেরী।
এছাড়াও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ আল্লামা তৈয়ব আলি, অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুর রহিম মুনিরি, ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মো. আবু আজম, এইচ এম মুজিবুল হক শুকুর, অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন জিহাদী, অধ্যাপক সৈয়দ গিয়াস উদ্দীন, মাওলানা এনাম রেজা কাদেরি, মাওলানা রফিকুল ইসলাম নেজামী, হাসান আজহারী প্রমূখ।
শাইখুল হাদীস আল্লামা সোলাইমান আনছারি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশরক্ষার সংগ্রামে সাহসি ভূমিকা পালন করেছিল এদেশের সুফিবাদি আলেম সমাজ, ছাত্র-যুব-জনতা। তেমনি ২০২৪ সালে সুফিবাদি আলেম সমাজের সক্রিয় সমর্থনসহ হাজারো শিক্ষার্থীর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ মহাবিজয়কে বিতর্কিত করার জন্য নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল। তাদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছে না মন্দির-মসজিদ, মাজারসহ ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহ। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার লক্ষে চিহৃিত মহলের সাজানো সব ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে প্রতিহত করার আহবান জানান।
প্রধান বক্তা অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মো. ফরিদ উদ্দীন বলেন, স্বাধীনতার পর এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় সংকটময় মূহুর্তে দেশ ও জনগণ। এর থেকে উত্বরনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি জুলাই হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় তিনি গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুন্যাল গঠন করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানান।
এ সময় সমাবেশে অন্তরবর্তীকালীন সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি পাঠ করেন শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশের সমন্বয়ক শাহজাদা এডভোকেট সৈয়দ মুখতার আহমদ সিদ্দিকি।
১ম দফা : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার চাই।
২য় দফা : এ আন্দোলনে এখন পর্যন্ত যারা কারাগারে আছেন তাদেরকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।
৩য় দফা : এ আন্দোলনে আহত অবস্থায় যারা চিকিৎসাধীন আছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
৪র্থ দফা : বিভিন্ন মসজিদ, মাজার ও মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনানুগ শাস্তি প্রদান করতে হবে।
৫ম দফা : শহীদ আল্লামা নরুল ইসলাম ফারুকী হত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬ষ্ঠ দফা : মনিটরিং সেল নিয়োগের মাধ্যমে দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৭ম দফা : নতুন শিক্ষানীতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাতিল করতে হবে।
৮ম দফা: পাঠ্য বইয়ে ইসলাম ও কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী যাবতীয় লেখা বাতিল করতে হবে।
৯ম দফা : খতিব ও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন-ভাতা সরকারীভাবে চালু করতে হবে।
১০ম দফা: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল সরকারী-বেসরকারী অফিস থেকে শতভাগ দূর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
১১তম দফা: সরকার পতনের পর এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেশী মহল বিভিন্ন মসজিদ হতে নির্ধারিত খতিব, ইমামদের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান করছে। অবিলম্বে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।