শক্তি বাড়িয়ে আগাচ্ছে সিত্রাং, সন্ধ্যায় বন্ধ হবে তিন বিমানবন্দর, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপুল শক্তি সঞ্চার করে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে সিত্রাংয়ের প্রভাবে এরই মধ্যে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠে গেছে। অনেক এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় আজ সোমবার সন্ধ্যা থেকেই বিমান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কাও জোরালো হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলাপ্রশাসন, নেয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা।

উপকূলে বৈরী আবহাওয়া
প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। চরম বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। এতে করে মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপকূলীয় জেলাগুলোর মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে জেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণদের।

উপকূলের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সিত্রাংয়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এরই মধ্যে জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরে আরও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

বিমান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আজ সন্ধ্যা থেকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ৩ বিমানবন্দর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। আবহাওয়ার পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিমানবন্দর।

সোমবার বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, ঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে দেশের বিমানবন্দরের এপ্রোন এলাকার হালকা যন্ত্রপাতি সরিয়ে রাখা হচ্ছে। এয়ারলাইনগুলোকেও তাদের যন্ত্রপাতি নিরাপদ স্থানে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে ঝড়ে কোনও যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে এরইমধ্যে দেশের এয়ারলাইনগুলো নিয়েছে। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছে নভোএয়ার। বিকাল থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের ফ্লাইট বাতিল করেছে তারা। তবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফ্লাইট চলাচল করছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিমান বন্দর সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত ফ্লাইট চলছে স্বাভাবিক ভাবে। আবহাওয়ার বিভাগের সাথে সমন্বয় করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের শঙ্কা
পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে ভারী অর্থাৎ ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার থেকে অতিভারী অর্থাৎ ৮৯ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এদিকে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর শঙ্কা প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রাম জেলাপ্রশাসন পাহাড় ধস হলে ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করছে। সেখানে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।