রাজশাহীতে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব, স্বস্তিতে নেই সাধারণ মানুষ

রাজশাহীতে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে রাসেল ভাইপার আতঙ্কে এলাকার সাধারণ মানুষ যখন চরম আতঙ্কে দিন পার করছে ঠিক সেই সময় রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলেছে এই রাসেল ভাইপার সাপের।

সাপের উপস্থিতি দেখে রাজশাহী মহানগরীর অনেক স্থানে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে । বাড়িকে সাপ মুক্ত রাখতে বাড়ির চারপাশে ফেনল কার্বলিক এসিড, ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করতে দেখা গেছে অনেককে। বিশেষ করে এই সাপ আতঙ্কে সাইন্টিফিক এর দোকানগুলোতে ফেনল কার্বলিক অ্যাসিড কিনতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

শুধু রাসেল ভাইপার নয় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাড়ির আশেপাশের ডোবা, নালা, ড্রেন থেকেও নানা ধরনের সাপ শুকনো জায়গার খোঁজে মানুষের আবাসস্থলে ঢুকে পড়ছে। রাজশাহী মহানগরের আশেপাশের থানা এলাকাগুলোতেও এমন সাপের উপদ্রব লক্ষ্য করা গেছে। এমনকি স্কুল কলেজও দেখা মিলছে এসব সাপের।

 

২৩ জুন রোববার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ভেতরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৬টি রাসেলস ভাইপার সাপ পাওয়ার পরে কুঠিপাড়া, পিরোজপুর এলাকায়  রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এছাড়াও গত ১ জুলাই সোমবার রাতে চারঘাট থানাতে হঠাৎ দেখা মেলে রাসেল ভাইপার সাপের। এতে থানায় কর্মরত অফিসার ফোর্সদের মাঝে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে থানা পুলিশ সাপটিকে মেরে ফেলে।

 

গত ৩ জুলাই বুধবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে দেখা মিলেছে বিরল প্রজাতির রাসেলস বোয়া (বালি বোড়া) জাতের সাপের। পরে স্থানীয়রা সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।

 

রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

সাপ ও সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ বোরহান বিশ্বাস বলেন, ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে এটি বিরল রাসেলস বোয়া। মৃত হলেও সাপটি আমাদের গবেষণার জন্য দরকার। এটি হাতে পেলে আমরা তার আইডেন্টিটি পুরোপুরি ক্লিয়ার হবো। তবে এটি দেখে রক পাইথন মনে হচ্ছে।

 

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতেও রাসেল ভাইপার সহ বিভিন্ন ধরনের বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়েছে।  শুক্রবার (২৯ জুন) রাতে বিষধর সাপের কামড়ে বুলবুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের চাপাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।

 

রামেক হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, সাপে কাটা ওই যুবককে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ইসিজি করে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। সাপে কাটার আড়াই ঘন্টার মধ্যেই ওই যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।রামেক হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন সাপে কাটার সাথে সাথেই দ্রুত স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অথবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। অনেকেই না বুঝে ও ওঝা বা কবিরাজ এর কাছে  ঝাড়ফুঁক করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করে ফেলেন যার ফলে দেরিতে আসার কারণে এন্টিভেনম প্রয়োগ করার পরেও কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই যত দ্রুত সম্ভব সাপে কাটা রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতে হবে।