চট্টগ্রামের রাউজানে লাভের আশায় কৃষকেরা পেঁয়াজ চাষের দিকে ঝুঁকছে। দাম উঠা-নামার খেলায় শীর্ষে থাকা পেঁয়াজের চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করে রমজান মাসে নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করছেন কৃষকেরা।
ভাগ্য বদলের আশায় পেয়াজ চাষ করেন রাউজানের ২০-২৫জন কৃষক। তৎমধ্যে প্রদর্শনীভুক্ত ১০জন। ফলন ভালো হয়েছে, শুরু হয়েছে বিক্রি।
বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হওয়ায় রাউজান পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের শরীফ পাড়া এলাকায় পেঁয়াজের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।
তিনি বলেন, ‘রাউজানে কেউ কৃষি জমি ভরাট ও খনন করতে পারবে না। চাষাবাদের সুবিধার্তে খাল খননসহ কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
শরীফ পাড়া ও ঢেউয়া পাড়া এলাকায় ৩০০ কৃষককে একটি করে কোদাল উপহার দেন ফজলে করিম এমপি। এদিকে আমদানি নির্ভর না থেকে দেশে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, আমদানি হ্রাস বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে চাষাবাদের ফলে গ্রামীণ জনপদে তেমন প্রভাব পড়বে না । রাউজান উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, রমজান মাসকে টার্গেট করে রবি মৌসুমে উপজেলার ডাবুয়া, হলদিয়া চিকদাইর, কদলপুর, নোয়াপাড়া ইউনিয়ন ও পৌরসভা মিলে ৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। হেক্টর প্রতি পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে ৭ থেকে ৮ মেট্রিক টন। সে হিসেবে রাউজানে প্রান্তিক কৃষকদের পরিশ্রমে এবার পেঁয়াজ উৎপাদন হবে ৪০-৪২ মেট্রিক টন। ভালো ফলনে নিজেদের চাহিদার পাশাপাশি বিক্রি করে কৃষকেরা স্বাবলম্বী হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে ২০-২৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষাবাদ করা হবে বলে আশাবাদী উপজেলা কৃষি বিভাগ।
রাউজান পৌরসভার শরীফ পাড়া এলাকার কৃষক আবু তাহের বলেন, ‘আমি ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে ৩০ শতক জমিতে পেয়াজের চাষাবাদ করেছি। ফলন ভাল হয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারবো।’
এই প্রসঙ্গে রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, ‘রাউজানে গত বছর থেকে পেঁয়াজের আবাদ শুরু হয়। এবার ৬ হেক্টর জমিতে বারি-১ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। পেঁয়াজের বীজ ১৮-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহনীয়। তাই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ শেডে বীজ বুনে চারায় রূপান্তরের পর চাষাবাদ করেন কৃষকেরা। অনাবাদি জমি চাষযোগ্য করে তোলার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি সার, বীজ, কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি প্রদান করা হচ্ছে। ’