রমজানে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো জরুরি

খুব বেশিদিন নয়, মাত্র মাস দেড়েক পর অর্থাৎ, আগামী ১২ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। পাঁচ মন্ত্রীর বৈঠকে ইতোপূর্বে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান আসার পূর্বেই ছোলা-ডাল, রসুন-পেঁয়াজসহ মুসলমানদের রমজানে যে সকল খাদ্যদ্রব্যের অতিরিক্ত চাহিদা থাকে, সে সব ভোগ্য পণ্যের মূল্য অকারণেই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। দৈনিক দেশ বর্তমানসহ গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্যবসায়ীরা বর্তমান বাজারে রমজান সংশ্লিষ্ট নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে তারা কোন অজুহাতও দেখাতে পারছে না। এরই মধ্যে চাল ব্যবসায়ীরা কেজিপ্রতি ৫/৭ টাকা মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারিতে বস্তাপ্রতি ১০০/১৫০ টাকা কমিয়ে আনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সবচেয়ে অবাক লাগে, কথা নাই বার্তা নাই হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেল, জিনিসের দাম বেড়ে গেল! এটা মেনে নেয়া যাবে না। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীও হুঁশিয়ার করে বলেছেন, কৃত্রিম সংকট বা দাম বাড়ানোর সাথে জড়িতের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইনের আওতায় আনা হবে।

আমরা মনে করি, সিন্ডিকেট কিংবা অসাধু ব্যবসায়ীদের ধারা এ ধরনের কার্যকলাপ শুরু হলে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন না। যে কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে যায়। দফায় দফায় বৈঠক করে কোন লাভও হবে না। দেশের সাধারণ মানুষ যদি কোন সুফল না পায় বাজার সংক্রান্ত মন্ত্রণালয় সমূহের বৈঠক, আলোচনা, সমালোচনা এবং সিদ্ধান্ত কোন কাজে আসবে না।

অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান আসার দেড় মাস আগ হতে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলছে। বাড়াচ্ছে রমজানে বাড়াতে যেন না হয় এই অসৎ উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে। তারা যদি তাদের এ অপকৌশল কাজে লাগিয়ে আগেভাগে দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলতে পারে তা হলে রমজানে তাদের দাম বাড়াতে হবে না। আগে থেকেই যদি রমজান সংশ্লিষ্ট দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে ফেলে তা হলে মন্ত্রীদের বৈঠকে রমজানে দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধে যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক না কেন তা জন্মের পূর্বেই বধ হয়ে যাবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের এহেন অপকৌশল কালবিলম্ব না করে এখন হতে কাঁচাবাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ শুরু করা জরুরি। বাজারের খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে অনতিবিলম্বে কাজ শুরু করা জেলা প্রশাসক, স্থানীয় প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর হতে শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সততা নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ভাইরাসে দেশের সাধারণ মানুষ ভয়াবহ ভাবে আক্রান্ত।