রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কারের অর্থ এবং কতিপয় বুদ্ধিজীবীর বালখিল্যতা

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশে রবীন্দ্রচর্চা খুবই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সেগুলি তাঁর সাহিত্যকর্ম নিয়েই। রবীন্দ্রনাথের পল্লী উন্নয়ন, গ্রামীন ব্যাংক এবং তাঁর নোবেল প্রাইজমানি ইত্যাদি নিয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে খণ্ডিত আলোচনা হলেও পরিপূর্ণ কোন গবেষণাই হয়নি।

গোলাম মুর্শিদের ‌‌‘রবীন্দ্র বিশ্বে পুর্ববঙ্গ পুর্ববঙ্গে রবীন্দ্রচর্চা’, আহমদ রফিকের ‘রবীন্দ্রভুবনে পতিসর’, মুজিব উদ্দিন মিয়ার ‘গল্পগুচ্ছের সমাজ ও জীবন’, আনোয়ার পাশার ‘রবীন্দ্র ছোটগল্প সমীক্ষা’, আ ন ম বজলুর রশিদের ‘রবীন্দ্রনাথ’, আনিসুজ্জামান সম্পাদিত ‘রবীন্দ্রনাথ’, মোফাজ্জল হায়দারের ‘রবীন্দ্র পরিক্রমা’, আবুহেনা মোস্তফা কামালের ‘রবীন্দ্রনাথ ও পুর্ব পাকিস্তান’, আবুল ফজলের ‘মানবতার কবি রবীন্দ্রনাথ’, স্বরোচিস সরকারের ‘অষ্পৃষ্যতা ও রবীন্দ্রনাথ’ এসব গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য কৃর্ত্তীর আলোচনা সমালোচনাই মুখ্য। তবে আতিয়ার রহমানের ‘রবীন্দ্র ভাবনায় আত্মশক্তি ও বাঙালির জাতীয় বিকাশ’, অরুণ কুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘রবীন্দ্রনাথ : পল্লী পুনর্গঠন’ এবং সুকুমার মল্লিকের ‘পল্লিচিন্তা’ এগুলো গবেষণাধর্মী হলেও রবীন্দ্রনাথের নোবেল প্রাইজের প্রাপ্ত টাকা কোথায় কি কাজে ব্যবহৃত হয়েছে, তার উল্লেখ নেই বললেই চলে।

জানা যায় বেশ কয়েকবছর পূর্বে পতিসরে প্রতিষ্ঠিত ‘সমবায় কৃষি ব্যাংকের’ হিসাবের খাতা পাওয়া গেছে। তাতে নোবেল প্রাইজের টাকা জমার কথা আছে কিনা, থাকলে কতটাকা! তা নিয়ে কোন তথ্য প্রকাশ পায়নি। অথচ অনেকেই জোর দিয়ে লিখছেন, রবীন্দ্রনাথ নোবেল প্রাইজের সব টাকা ‘পতিসর কৃষি ব্যাংক ‘ জমা রেখেছিলেন। আর সেটাকা প্রজারা ধারে নিয়ে আর ফিরিয়ে দেয়নি। কবির সবটাকা জলে গেছে। অথচ এ নিয়ে কোন গবেষণাই হয়নি। এবং জমা রাখা টাকার মোট পরিমাণ নিয়েও প্রচুর মতানৈক্য রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আবু আফজাল লিখেন, অথচ এরা কেউই ঐ খাতা নিয়ে কোন গবেষণাই করেননি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত পতিসর গ্রামীণ সমবায় কৃষি ব্যাংক বিষয়ে মূল নথিগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা ও পর্যালোচনা হয়নি বলে জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও রবীন্দ্রনাথের কৃষি ভাবনা বিষয়ক গবেষক ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথই উপমহাদেশে প্রথম গ্রামীণ কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। নথিটির মধ্যে হয়তো এমন তথ্য রয়েছে, যা ইতিহাসের অমূল্য দলিল। নথিটি দ্রুত কোনো জাদুঘরে সংরক্ষণ করা উচিত। (১)

অথচ ড. আতিয়ার রহমান নিজেও সে খাতা পরীক্ষা না করেই তাঁর ‘বিশ্ব নাগরিক’(?) প্রবন্ধে নোবেল প্রাইজমানির মূল্য একলক্ষ কুড়ি হাজার টাকা লিখেছেন। এবং বলেছেন, এর সবটাকা কবি পতিসর সমবায় কৃষি ব্যাংকে জমা রেখেছিলেন। তবে কৃষকেরা (৭০-৮০% মুসলমান) ফেরত না দেওয়ায় সবটাকা জলে গেছে।

প্রয়াত বুদ্ধিজীবী আকবর আলি খানও রবীন্দ্রজয়ন্তির টিভি প্রোগ্রামে বলেছেন, কৃষি-উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ পতিসরের কৃষকদের মধ্যে নোবেল প্রাইজের সব টাকা বিতরণ করে নিঃস্ব হয়েছেন।

অপরপক্ষে পশ্চিম বঙ্গের অনেকেই যাদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের জমিদারি স্টেটে ঊর্ধ্বতন কর্মচারী, শান্তিনিকেতনের অধ্যাপকরাও লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ নোবেল প্রাইজের টাকা পুরোপুরি বা আংশিক শান্তিনিকেতনে খরচ করেছেন।

রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত পতিসরের ‘সমবায় কৃষিব্যাংক’ আদতেই সরকারি নিয়মনীতি মানা কৃষিব্যাংক ছিলো নাকি কৃষিব্যাংকের আড়ালে মহাজনি ‘সুদের ব্যবসার আখড় ‘ ছিলো, তাও তুলে ধরা হবে এ প্রবন্ধে।

বিশিষ্টজনদের মতে রবীন্দ্রনাথ সারাটা জীবন ধারকর্জে এবং ব্যবসায় নোকসানে ডুবেছিলেন, তাই নোবেল প্রাইজের অর্থ দিয়ে সে সব ধারকর্জ শোধ করেছিলেন। এই বিষয়ে নানান জনের মন্তব্যের কিছু উল্লেখ করা গেলো। এগুলোর কতটা সত্য, কতটা অতিরঞ্জিত তা বিচার্য।

রবীন্দ্রনাথের জীবনে অর্থকষ্ট কোনদিন কাটেনি। তিন তিনটি জমিদারি দেখাশোনার জন্য মাসোহারা পেতেন মাত্র ২০০ টাকা। অর্থের টানাটানির জন্য কবি পর পর দুই নাবালিকা কন্যাকে বিয়ে দিয়েছিলেন পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কাছ থেকে যৌতুকের টাকা উসুল করে নেওয়ার জন্য। এই অর্থ কষ্ট দূর করার জন্য কবি অনেক রকমের ব্যবসায় নেমেছিলেন। ধারকর্জে ডুবেছিলেন। এ প্রসঙ্গে কীর্তিমান লেখক গবেষক আবদুস শাকুরের লেখা ‘রবীন্দ্র জীবনের অনুজ্জল অঞ্চল’ এবং তাঁর রবীন্দ্রবিষয়ক প্রবন্ধাবলীর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের অর্থকষ্ট ও ধারদেনায় জর্ঝরিত হওয়ার বিশদ বিবরণ রয়েছে।

‘রবীন্দ্রনাথের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক সঙ্কট’ প্রবন্ধে কতিপয় লেখক বুদ্ধিজীবীর বিবরণ তুলে ধরা হলো। “রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে ‘ঠাকুর কোম্পানি’ নামে একটা ব্যবসা চালু করেছিলেন। তিনি (রবীন্দ্রনাথ) ভাইপো সুরেন্দ্রনাথ ( সত্যেন্দ্রনাথের পুত্র) ও বলেন্দ্রনাথের (বীরেন্দ্রনাথের পুত্র) সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের মত দুঃসাহসীক কাজে নেমেছিলেন। সেই নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ‘কুষ্টিয়ার ঠাকুর কোম্পানী’। কিন্তু সে কোম্পানী অতিসত্বর লোকসানজনিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ে ব্যবসার সত্তর হাজার টাকার ঋণ তাঁর ঘাড়ে এসে পড়ে। (২)

মোতিচাঁদ নাখতার নামক এক মড়োয়ারী রত্ন ব্যবসায়ী মহাজনের কাছথেকে .. .. ‘ঠাকুর কোম্পানি’র দেনা শোধের জন্য বার্ষিক সাতটাকা সুদে রবীন্দ্রনাথ চল্লিশ হাজার টাকা ধার করেছিলেন।..এই প্রথম তিনি অনাত্মীয় অবন্ধুর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ সংগ্রহ করতে বাধ্য হয়ে হন। এই ধার তাঁকে শোধ করতে হয়েছে বছর কয়েক পর বন্ধু ব্যারিস্টার তারক নাথ পালিতের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার জোগাড় করে। বন্ধুর ঋণ শোধ করেন তিনি নোবেল প্রাইজ বাবত প্রাপ্ত অর্থের অবশিষ্ট অংশ থেকে । (৩)

কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ১৯১৫ সালে ‘ওয়েলিংটন মোটর ওয়ার্ক্স’ নামে একটি সংস্থা গড়ে মোটরগাড়ি আমদানি রপ্তানি ও মেরামতির ব্যবসায়ে নেমেছিলেন….রবীন্দ্রনাথ পুত্রের এই ব্যবসায় নেপথ্য থেকে উৎসাহ দিতেন।ব্যাংকে রাখা পিতার নোবেল পুরস্কার ও বইয়ের রয়্যালটির টাকা থেকে আর্থিক সহযোগীতা পেতেন রথীন্দ্রনাথ। ১৯১৭ সাল নাগাদ ব্যাবসার পড়তিদশা দেখে শঙ্কিত রবীন্দ্রনাথ পুত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। (৪)

বলাবাহুল্য, নোবেল পুরস্কারের বিরাট অংক ঐ মোটরগাড়ির ব্যাবসায় ডুবেছিলো। সুতরাং পতিসর ব্যাংকে যদি কবি নোবেল পুরস্কারের টাকা রেখেও থাকেন, তা থেকে বিরাট অংক তুলে নিয়েছিলেন। এসব ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ সুতারকলের ব্যবসা, আখমাড়াই কলের ব্যবসা করে নোকসান দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের আর্থিক কষ্টের বিবরণ দিতে গিয়ে রবীন্দ্র গবেষক আবদুশ শাকুর লিখেন,
‘অবশেষে গিয়ে থুয়ে যেটুকু জমিদারির মালিক হলেন তাও কবির দারিদ্র মোচন করতে পারেনি। কারণ, ততদিনে রবীন্দ্রনাথ পল্লিউন্নয়নের আদর্শ বাস্তবায়ন, শান্তিনিকেতন যিশ্বভারতি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উচ্চবিলাসী কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে একের পর এক ব্যক্তিগত মামলা মোকদ্দমা ও ধারকর্জের জালে পড়ে অনবরত জর্জরিত জীবনযাপনে হাঁস ফাস করেছেন। অর্থের নিত্য নতুন উদ্ভুত প্রয়োজন মেটাতে ঋণ,আবার সে ঋণ শোধ করতে ঋণ। অর্থাভাবের এই দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসার অপরিহার্য গরজেই অর্থকরি নানারকম ব্যবসার পেছনে ছোটা আর হোঁচট খেয়ে পেছানো। (৫)

প্রসঙ্গ শান্তিনিকেতন :

কবির নোবেল পুরস্কারের টাকার পুরোটাই বা আংশিক যে নানাকারণে কবি শান্তিনিকেতনে ব্যয় করেছিলেন, অনেকের লেখায় তা প্রকাশ পেয়েছে।

শান্তিনিকেতনে শিক্ষা গ্রহণ ও বসবাসকারী প্রমথনাথ বিশী লিখেন, নোবেল প্রাইজ লাভের সংবাদ বহন করিয়া বোলপুরে যখন টেলিগ্রাম আসে, তখন রবীন্দ্রনাথ নেপালবাবু প্রভৃতি আরো দু’একজন অধ্যাপকের সাথে কাছেই কোথাও বেড়াইতে গিয়াছিলেন।সেখানে টেলিগ্রাম খানি পাঠাইয়া দেওয়া হয়। তিনি নীরবে টেলিগ্রাম খানা পড়িয়া নেপাল বাবুর হাতে দিয়া বলিলেন, নিন নেপাল বাবু, আপনার ড্রেন তৈরির টাকা। টাকার অভাবে ড্রেনের কাজ বন্ধ হইয়া পড়িয়াছিল। তখন আশ্রমে টাকার টানাটানি চলিতেছিল। (৬)

বিশ্বভারতীতে কবি সনাতন ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার ব্রহ্মচর্য ও গুরুপ্রথার পুনর্প্রবর্তন করেছিলেন। এই বিদ্যালয়ের জন্য অর্থসংগ্রহ করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন তিনি। নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ তিনি ঢেলে দিয়েছিলেন এই বিদ্যালয়ের পরিচালন খাতে । (৭)

১৯১৪ সালে এড্রুজ এবং পিয়ারসন আসার পর কবি পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। শান্তিনিকেতনে পাঠদানের জন্য, থাকার জন্য ‘উদীচী, দেহালি, নতুন বাড়ি, বিচিত্রা, কোনার্ক, সন্তোষালয়, উদয়ন, শ্যামলী, নতুন বাড়ি, সেজুতি, পুনশ্চ, ঘন্টাতলা, সামীন্দ্র পাঠাগার, গৌরপ্রাঙ্গন, সিংহসনদ, চৈত্য, দিনান্তিুকা, দ্বিজবিরাম, কালোবাড়ি, উদীচী ইত্যাদি বহু দালান তৈরি করতে হয়েছিলো। শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার জন্য সুরুলে বারো হাজার টাকা দিয়ে একটি বাড়িও কিনেছিলেন। তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে নোবেল প্রাইজ মানি ছাড়া খরচ করার মত অন্য কোন উপায় ছিলোনা।

প্রতিমা দেবী, রানি মহলানবিশ, রানি চন্দ, প্রমথনাথ বিশী, প্রশান্তকুমার পাল, প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ও আরো অনেকে যাঁরা শান্তিনিকেতনের প্রথম দিকের কথা লিখেছেন, তাঁরা এক বাক্যে শান্তিনিকেতনে প্রচণ্ড অর্থকষ্টের কথা বলেছেন। এই সময় শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মবিদ্যালয়ে অর্থসংকট তীব্র হয়ে ওঠে। পাশাপাশি পুত্র ও জামাতার বিদেশে পড়াশোনার ব্যয়ভারও রবীন্দ্রনাথকে বহন করতে হয়। এমতাবস্থায় রবীন্দ্রনাথ স্ত্রীর গয়না ও পুরীর বসতবাড়ি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। (৮)

বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সূচনায় ছাত্রদের আহার বা শিক্ষার সম্পুর্ণ ব্যয়ভার কবি নিজে বহন করছিলেন। এর ফলে রবীন্দ্রনাথের উপর বিরাট আর্থিক চাপ পড়ে। পরবর্তীকালে তাঁর নোবেল পুরস্কারের অর্থের আয় এবং তাঁর সমস্থ গ্রন্থের আয়ও শান্তিনিকেতনের কাজে ব্যয় করেন। অতিরিক্ত খরচ মেটাবার জন্য তাঁকে চড়া সূদে ঋণও করতে হয়েছে। (৯)

তিনি তাঁর নোবেল পুরস্কারের সমুদয় অর্থ স্কুলে দান করেন। ১৯২২ সালে তিনি তাঁর বাংলা গ্রন্থাবলির গ্রন্থস্বত্ব বিশ্বভারতীকে দান করেন। (১০)

শান্তিনিকেতনের পরিধি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। আশেপাশের জমিদারদের থেকে জায়গা কিনে আরও বড় পরিসরে কিছু করার পরিকল্পনা করেন রবীন্দ্রনাথ। নোবেল পুরষ্কার থেকে পাওয়া অর্থ এই কাজে লাগিয়ে দেন তিনি। নোবেলের পুরস্কার মূল্য বাবদ তিনি ৮,০০০ পাউন্ড পেয়েছিলেন। সে সময় ভারতীয় মূল্যে যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার সমান। ওই টাকা রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর স্বপ্নের আশ্রম গড়ার কাজে ব্যয় করেন। রবীন্দ্রনাথ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেন বিশ্বভারতী। (১১)

রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরষ্কারের মূল্য দিয়ে যেভাবে গড়ে উঠল বিশ্বভারতী। (১২)

প্রসঙ্গ পতিসর সমবায় কৃষিব্যাংক :

নোবেল পুরস্কারের টাকা ‘পতিসর কৃষি সমবায় ব্যাংকে’ জমা দেয়ার কথা যেসব লেখক বুদ্ধিজীবী লিখেছেন বলেছেন, তাদের উল্লেখিত টাকার অঙ্কে ব্যাপক বৈষম্য বিদ্যমান। কারো সাথে কারো মিল নেই। নিন্মে পর্যায়ক্রমে তা উল্লেখ করা গেলো।

“রবীন্দ্রনাথ শেষ পর্যন্ত বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় পরিজনের কাছে ধার দেনা করে পতিসর ব্যাংক খুললেন নাম ‘পতিসর কৃষি সমবায় ব্যাংক’ উদ্দেশ্য স্বল্প সুদে প্রজাদের টাকা ধার দিয়ে মহাজনের গ্রাস থেকে তাঁদের মুক্ত করে অর্থবৃত্তে স্বাবলম্বী করা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ‘পতিসরে আমি কিছুকাল হইতে পল্লীসমাজ গড়িবার চেষ্টা করিতেছি যাহাতে দরিদ্র চাষী প্রজারা নিজেরা একত্র মিলিয়া দারিদ্র, অস্বাস্থ ও অজ্ঞান দূর করিতে পারে-প্রায় ৬০০ পল্লী লইয়া কাজ ফাঁদিয়াছিৃ.. আমরা যে টাকা দিই ও প্রজারা যে টাকা উঠায়..এই টাকা ইহারা নিজে কমিটি করিয়া ব্যায় করে। ইহারা ইতিমধ্যে অনেক কাজ করিয়াছে”। (১৩)

কবিগুরু মহাজন এবং জমিদারদের কবল থেকে সহজ-সরল কৃষকদের বাঁচাতে স্বল্প সুদে ক্ষুদ্রঋণের কথা মাথায় রেখে .. ১৯০৪ সালের দিকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সমবায় ব্যাংক। এরপর মহাজনী ঋণের ফাঁদে আটকা পড়া দরিদ্র কৃষকদের মুক্তির লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ শুরু করেন। ১৯১৩ সালে নোবেল পদকের সঙ্গে প্রাপ্ত ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তার মূলধনে যোগ হওয়ায় কৃষি ব্যাংকের ঋণদান ক্ষমতা বেড়ে যায় । (১৪)

“কৃষিব্যাংকটির ঋণের সুদের হার ছিল ১২ শতাংশ সরল সুদ। (১৫)

“নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলেও অর্থ-কষ্ট একেবারে চলে যায় নি।.. ..উল্লেখযোগ্য যে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ সেই টাকার বেশ বড় অঙ্ক সেই পতিসর গ্রামীণ ব্যাঙ্কে লগ্নী করেন, যাতে প্রজারা অল্প সুদে দাদন পেতে পারে। (১৬)

“কবি মূলধন সংগ্রহ করেন তাঁর ধনী বন্ধুদের থেকে ধার করে। কিন্তু ১৯১৩ সালে কবির নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এই ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন। এতে করে ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকদের মধ্যে ঋণ প্রদান সুনিশ্চিত হয়। (১৭)

অথচ সত্যিটা হলো, রবীন্দ্রনাথ ৭/৮% সুদে টাকা এনে ১২% সুদে ধার দিতেন। কৃষিব্যাংকে নোবেল প্রাইজের টাকা রাখার ব্যাপারে রবীন্দ্র জীবনীকার সত্যিকার কোন তথ্য দিতে পারেননি। লিখেছেন, বৈষয়িক ব্যাপারের মধ্যে পতিসর কৃষিব্যাংকে নোবেল পুরস্কারের টাকা রাখিবার কথা ভাবিতেছেন.. সমস্যার কিছুটা সমাধান হয় নোবেল পুরস্কারের টাকা ১৯১৪ সালের প্রথম দিকে কৃষি ব্যাংকে জমা হওয়ার পর। কত টকা ব্যাংকে মূলধোন ছিল তা নিয়েও মতোভেদ আছে কেউ বলছেন এক লক্ষ আট হাজার আবার অনেকে লিখেছেন এক লক্ষ আটাত্তোর হাজার টাকা। (১৮)

১৯১৩ সালে সেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হলে রবীন্দ্রনাথ তাঁর নোবেল পুরস্কারের ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা আর তিনি ফেরত পাননি। (১৯)

কৃষিব্যাংকে রাখা টাকার পরিমাণ সম্পর্কে নানাজন নানান অংক ব্যবহার করলেও পতিসরের জমিদারী এলাকায় সাধারণ হিতকর হাইস্কুল ও ডাক্তারখানা স্থাপন ও উন্নতির জন্য জামিদারের বার্ষীক দানের বরাদ্দ ছাড়াও প্রজাদের খাজনার উপর স্থায়ী ‘কল্যাণবৃত্তি’ নামে চাঁদা আদায়ের প্রচলন করেছিলেন,তার সঠিক তথ্য পাওয়া গেছে। সে সময়কার সরকারী শাসনবিভাগের এ বিষয়ে রাজশাহী ডিস্ট্রিক গেজেটিয়ারে প্রকাশিত মন্তব্য,

ÒThere is a High School with 250 students  a Charitable dispensary.These are maintained out of a fund to which the State Contributes annually Rs.1250 and

the raiyats 6 pies to rupee in there rent……And Agriculture Bank advances

loan to raiyats at 12 percent per annum.The depositors are chiefly Calcutta-friends of the poet ,who get interest at 7 percent. The Bank has amount Rs 90 000/ inverted in loans. (20)

তদোপরি পল্লী সমাজের কাজের উন্নতির জন্য প্রজাদের কাছ থেকে খাজনার টাকার সাথে সালিসী ব্যবস্থার উপর কর, বিবাহের উপর কর, সাপ্তাহিক বা মাসিক কর, পূজা পার্বনের উপর কর, এলাকার হাট বাজারের ইজরা, বেচাকেনার উপর করারোপ করা হয়।রবীন্দ্রনাথ এসব করকে বলতেন ‘স্বেচ্ছাদান ও ঈশ্বর বৃত্তি’। (২১)

১৯১৩ সালে সেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হলে রবীন্দ্রনাথ তাঁর নোবেল পুরস্কারের ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা আর তিনি ফেরত পাননি। (২২)

রবীন্দ্রনাথ ঋণের টাকা সুদ আসলে উসুল করার যে অমানবিক পদ্ধতি পয়োগ করেছিলেন তার বর্ণনা ড. আনোয়ারুল করিমের গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ‘এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে ধনি বন্ধু বান্ধবদের সহযোগীতা পেলেও ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেলে তার সমুদয় অর্থ তিনি পতিসর কৃষিব্যাংকে জমা দেন। এই পুরস্কারের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।…..এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, ফসল উৎপাদনের জন্যই কৃষিব্যাংক কৃষকদের ঋণ দিয়ে থাকতো, আবার ফসল উৎপাদন হলেই ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করা হতো। অবশ্য এক্ষেত্রে উৎপন্ন ফসল জমিদারের কার্যালয়ে আনা হতো এবং সুদসহ ঋণ পরিশোধ করে চাষি ফসল ঘরে নিয়ে যেতে পারতো। অবশ্য উৎপন্ন ফসল জমিদারের কার্যালয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের নামে দুর্নাম বা অপবাদ সৃষ্টি হয়েছিলো। (২৩)

নোবেল প্রাইজের ১০৮০০০ টাকা তাঁর হাতে এসে পড়লো। সুরেন দাদা (সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর) ও আমি প্রস্তাব করি যে প্রাইজের টাকাটা পতিসর কৃষিব্যাংকে ডিপজিট রাখা হোক শান্তিনিকেতনের বিদ্যলয়ের নামে। তাই করা হলো। যতদিন কৃষিব্যাংক ছিল, বহুবছর ধরে বিদ্যালয়ের ও পরে বিশ্বভারতীর বছরে আট হাজার টাকা করে একটি স্থায়ী আয় ছিল।

কৃষিব্যাংকের কাজ কিন্তু বন্ধ হয়ে গেল যখন Rural Indebtedness-এরআইন প্রবর্তন হলো। প্রজাদের ধার দেওয়া আদায় হবার উপায় রইলো না। নোবেল প্রাইজের আসল টাকা সেইজন্য কৃষিব্যাংক বিশ্বভারতীকে শেষ পর্যন্ত ফেরত দিতে পারেনি। (২৪)

এতেকরে পতিসরে ডিপজিট রাখা টাকার সঠিক পরিমাণ যেমন জানা গেলো তেমনি টাকাটা যে কেউ ইচ্ছাকরে পরিশোধ করেনি তা নয়। বরং আইনের ব্যত্যয়ে তা উসুল সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে Rural Indebtedness law নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।

বৃটিশ সরকার ১৯০৪ সালে ‘সমবায় কৃষিব্যাংক’ আইন প্রবর্তন করে। রবীন্দ্রনাথের পতিসর সমবায় কৃষিব্যাংক ১৯০৫ সালে (এতে মতভেদ আছে। কারও মতে ১৯০৮ সালে। কারও মতে ১৯১৫ সালে) প্রতিষ্ঠিত হয়। সুতরাং, এটি সরকারি রেজিস্টারড হওয়ার কথা। আর তা হলে ১৯৩০ সালে Rural Indebtedness Rule যা মহাজনি প্রথার অবসানকল্পে (চক্রবৃদ্ধি সুদের ফাঁদ থেকে গরীব কৃষকদেরকে রক্ষার জন্য) প্রবর্তীত হয়েছে, তার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা নয়। এ কৃষিব্যাংক যে সরকারের আইনানুগ প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠিত ছিলোনা তার প্রমাণ রবীন্দ্রনাথের কথায় প্রমাণিত।

ব্যাংকের শেষ অবস্থা নিরীক্ষণ করে .. .. কবিগুরু প্রমথ চৌধুরীকে বার বার অনুরোধ করে লিখেছেন, দোহায় তোমার যত শ্রীঘ্র পার ব্যাংটাকে জয়েন্ট ষ্টক কোম্পানিতে পরিণত করে নাও , কিন্তু কবির সে অনুরোধ শতর্কবাণী রাখা হয়নি, ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেল রবীন্দ্রনাথের সকল স্বপ্ন শেষ করে দিয়ে। (২৫)

১৯০৪ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ‘সমবায় সমিতি আইন’ গঠিত হয়। প্রাচীন ঐতিহ্যের আলোকে রবীন্দ্রনাথ পঞ্চায়েতী প্রথাকে ঢেলে সাজিয়েছেন। কৃষির উন্নতির জন্য তিনি কৃষিখামার,কৃষিব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। (২৬)

অর্থাৎ পতিসর কৃষি সমবায় ব্যাংক ১৯০৪ সালের ‘সমবায় সমিতি’ আইন মোতাবেক গঠন করা হয়নি। তাই ‘সমবায় কৃষিব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রমাণিত যে, পতিসরের সমবায় ব্যাংকের আড়ালে সেটি ছিলো রবীন্দ্রনাথদের ‘মহাজনি সুদের আখড়া’। আমাদের কথিত বুদ্ধিজীবী, লেখকেরা এ সত্যটা বলেন না বা স্বীকার করেন না কেন? আর পতিসরে ডিপজিট রাখা ১০৮০০০টাকা যে কেউ আত্মসাধ করেনি বা তা জলে যায়নি, তার তথ্যও উল্লেখ করা গেলো।

সম্প্রতি পতিসর থেকে ম্যানেজার রেবতী কান্ত ভৌমিক স্বাক্ষরিত, মতিউর রহমান মামুন কর্তৃক উদ্ধার হওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃষি ব্যাংকের হিসাবের খাতা অনুযায়ী ব্যাংক চলেছিল বাংলা ১৩২০ থেকে ১৩৪৫ Daily star 11-02-2009) Tagore krishi Bank dossiers found in Naogaon (Daily star 03-10-2009)— অর্থাৎ ইংরাজি ১৯১৩Ñ১৯৩৮ সন ২৫ বছর। ফলে ১৯৩০ সালে Rural Indebtedness law অনুযায়ী পতিসর সমবায় কৃষিব্যাংক বন্ধ হয়ে গেলেও ১৭ বছর যাবত আট হাজার টাকা হারে শান্তিনিকেতন সুদ নিয়েছে।অর্থাৎ ৮০০০ * ১৭= ১৩৬০০০(এক লাখ ছয়ত্রিশ হাজার টাকা)জমা রাখা হয়েছিলো ১০৮০০০টাকা।অর্থাৎ মূলধন উঠে আরো ২৮০০০ টাকা লাভ হয়েছে।

তাছাড়া আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা উচ্চকণ্ঠে বলেন এবং লিখেন যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রজাদের উন্নতির জন্য বিদেশ থেকে ট্রাক্টর কিনে এনেছিলেন। এটা যে মিথ্যে তা কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখায় উল্লেখ করেছেন।

“উত্তর বঙ্গ বন্যার সাহায্যার্থে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয় অনেক টাঁকা ঊঠিয়েছিলেন। দুঃস্থদের সাহায্য করার কাজ শেষ হয়ে গেলে এই ফাণ্ডে কিছু টাকা উদ্বৃত্ত থেকে গিয়েছিল। সেই টাকা দিয়ে আত্রাইতে স্থায়ীভাবে একটি খাদি আশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেন, কয়েকটি ট্র্যাক্টরও কেনা হয়। (২৭)

তবে রবীন্দ্র জীবনী, রথীন্দ্রনাথের পিতৃস্মৃতি আর ইতিহাস পাঠে জানা যায়, পতিসর জমিদারির প্রজাদের সাথে কবির আত্মার সম্পর্ক ছিলো। জমিদার রবীন্দ্রনাথ প্রজাদেরকে পুত্রবৎ স্নেহ করতেন। প্রজারাও তাঁকে পিতৃবৎ শ্রদ্ধা করতেন। ১৯৩৭ সালে পতিসর পরগনার বার্ষীক পূণ্যাহতে যোগদানের জন্য রবীন্দ্রনাথকে দাওয়াত দিলে কবি শেষবার নিজ জমিদারীতে গমন করেন। কালিগ্রামে কবিকে বিপুল সম্বর্ধনা দেয়া হয়। কবি তাঁর ভাষণে আবেগাপ্লুত হয়ে নিজে কেঁদে সবাইকে কাঁদিয়ে বলেন, ‘আজ তোমাদের সবার কাছ থেকে বিদায় নিতে এসেছি।তোমরা আমার বড় আপনজন।.. ইচ্ছেছিল মান সম্মান সব ছেড়ে দিয়ে তোমাদের সঙ্গে, তোমাদের মতই সহজ হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিবো,কিন্তু এ বয়সে তা হবার নয়।আমার যাবার সময় হয়ে এসেছে।…..সংসার থেকে বিদায় নেবার সময় তোমাদের সাথে দেখা হল, এটাই আমার সান্তনা। তোমাদের কাছ থেকে অনেক পেয়েছি, কিন্তু কিছু দিতে পেরেছি বলে মনে হয়না। সেসব কথা মনে হলে বড় দুঃখ পাই।..শরীর আমার অসুস্থ, আমার সময় ফুরিয়ে এসেছে। তোমরা নিজের পায়ে দাঁড়াও।তোমাদের সবার মঙ্গল হোক। (২৮)

বলাবাহুল্য রবীন্দ্র পুজা ভালো কিন্তু ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার এবং বালখিল্যতা চরম অপরাধ।

তথ্যসূত্র :

১.রবীন্দ্রনাথের গ্রাম উন্নয়ন ভাবনা-আবু আফজল সালেহ
২. রবীন্দ্র জীবনী-১,প্রভাত কুমার বন্দোপাধ্যায়
৩. রবীন্দ্রনাথের অনুজ্জ্বল অঞ্চল- আবদুশ শাকুর
৪. প্রাগুক্ত
৫. প্রাগুক্ত
৬. রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতন- প্রমথনাথ বিশী

7.Ray M.K.(2007),Studies on Rabindranath Tagore,1, Atlantic.

8.Datta P. K.(2007) Rabindranath Tagore’s ‘The Home and the world : A Critical Companion

৯.রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতন(পরিচয়)- তপন কুমার বসাক
১০.বাংলা পিডিয়া,শান্তিনিকেতন-উমাদাস গুপ্ত
১১.রবীন্দ্রনাথ : কমজানা অজানা-সুব্রত কুমার দাস
১২.সুদীপ দে- কলকাতা
১৩.পল্লী প্রকৃতি- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,বিশ্বভারতী
১৪.আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির স্বপ্নদ্রষ্টা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-গোপাল নাথ
১৫.ভোরের কাগজ
১৬.রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর বাণিজ্য মনস্কতা-রাহুল রায়
১৭.পল্লী উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ-শুভজিত বিশ্বাস
১৮.রবীন্দ্র জীবনী- প্রশান্তকুমার পাল
১৯.রবীন্দ্রনাথের জমিদারি-অরুণাভ পোদ্দার
২০. Extract from ‘Bengal District Gezetteer’s, Rajshahi-by Mr.L.S S.O Malley

২১. পল্লী প্রকৃতি– রবীন্দ্রনাথ
২২.রবীন্দ্রনাথের জমিদারি-অরুণাভ পোদ্দার
২৩.পল্লী উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ- ড. আনোয়ারুল করিম
২৪. পিতৃস্মৃতি- রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৫. রবীন্দ্র জীবনী- প্রভাত কুমার পাল,খণ্ড-৭
২৬.পল্লী উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ-ড. আনোয়ারুল করিম
২৭.পিতৃস্মৃতি – রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২৮. রবীন্দ্রমানসের উৎস সন্ধানে– শচীন্দ্রনাথ অধিকারী)

লেখক : কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক