যারা ভোট ডাকাত ছিল, তারাই এখন ভোটের অধিকারের কথা বলে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা ভোট ডাকাত ছিল তারাই এখন গণতন্ত্র চায়, ভোটের অধিকারের কথা বলে। যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে তাদের কাছ থেকে শুনতে হয় এই সমস্ত কথা! এগুলো মাঠের কথা। মাঠের কথা মাঠে থাকবে, আমরা থাকব জনতার সঙ্গে। জনতার পাশে থাকব, জনগণের ভাগ্য পরিববর্তন করব।

তিনি বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করে তাদের ভোটের মাধ্যমেই তো আমরা সরকারে এসেছি। কাজেই মানুষের আস্থা-বিশ্বাসটাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র শক্তি। জনগণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের একমাত্র বন্ধু।

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার (১৭ মে)) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গণভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বেলা ১১টার পর গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরাসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে, ভোটের অধিকার নিয়ে কথা বলে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার কবে ছিল? নানা পদক্ষেপের ফলে, বিভিন্ন সংস্কার করে করে নির্বাচন পদ্ধতিটাকে একটা গণমুখী করেছে আওয়ামী লীগ। ভোট সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেছে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব এ স্লোগান দিয়ে মানুষকে যে ভোটের সম্পর্কে সচেতন করা, এটা আওয়ামী লীগই করেছে। এটা আর কারও না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যেখানে ভুয়া ভোট দিয়ে ভোটার তালিকা হতো, সেখানে ছবিসহ ভোটার তালিকা, আইডি কার্ড, যতটুকু সংস্কার, মানুষের আস্তা বিশ্বাস অর্জন, এগুলো তো আওয়ামী লীগই করেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সও করে দিয়েছি আমরা। তারপরও কেউ যখন গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোট নিয়ে ছবক দিতে আসে আমাদের, সেখানে বলার কিছু থাকে না।

শেখ হাসিনা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ করার ঘোষণা দিয়ে সেটি কার্যকর করতে কাজ করে যাচ্ছি। যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বা যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তাদের ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। আমাদের অর্জন নস্যাৎ করতে চায় তারা। উদ্দেশ্যে যদি সততা সঙ্গে হয়, তাহলে যে কোনো জায়গায় সাফল্য আনতে পারে। এই কথাটা সবসময় মনে রাখি। লক্ষ্য একটাই এদেশে মানুষের জীবনটা উন্নত করা। তাদের ভাগ্যটা পরিবর্তন করা। কারণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়েছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। সেই হাসি ফোটানোটাই একমাত্র কর্তব্য। সেটা আমরা করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে যখন ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর দিই, সেই ঘর পাওয়ার পর তার যে মুখের হাসি ও চোখের পানি একাকার হয়ে যায়, আমার মনে হয় এর চেয়ে বড় পাওয়া বা সার্থকতা আর কিছু নেই। বাংলাদেশ অগ্রযাত্রাটা যেন অব্যাহত থাকে, তাই আমাদের প্রচেষ্টা হবে। জনগণের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করে তাদের ভোটের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতায় এসেছিলাম। মানুষের আস্থা বিশ্বাসটা হচ্ছে আমাদের একমাত্র শক্তি। আর কোনো শক্তি নেই। বাংলাদেশের জনগণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের একমাত্র বন্ধু, এটা মনে রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেদিন ফিরে আসি সেদিন তো আর চেনা মুখগুলো পাইনি, কিন্তু পেয়েছিলাম এদেশের জনগণকে, আর আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীকে, সেই থেকে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। আমি সেভাবেই নিয়েছি। আজকে আমি বলব, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি এটাকে ধরে রেখে বাংলাদেশে এগিয়ে নিতে হবে। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই চলতে হবে। ধন সম্পদ কারো চিরদিন থাকে না। মরলে ওই মাটির নিচেই যেতে হবে। কোনো কিছুই সাথে নিয়ে যেতে পারে না। বেশি করলে বদনাম টাই সাথে নিয়ে যেতে হয়। কাজে সেটা যেন না হয়।

প্রসঙ্গত, ৪৩ বছর আগে ১৯৮১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে আসেন। দীর্ঘ ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে তিনি স্বদেশের মাটিতে ফেরেন। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিদেশে অবস্থান করার কারণে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

১৫ আগস্টের ঘটনার পর দিশাহীন বিভক্ত আওয়ামী লীগের ঐক্যের প্রতীক হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্বভার কাঁধে নিয়ে দেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে এই দীর্ঘ ৪৩ বছরের পথচলায় বিশ্বদরবারে  আলোকিত করে চলেছেন বাংলাদেশের স্থান।