মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার রোধে প্রয়োজন সমন্বয়: সিআইডি প্রধান

মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার রোধে বিভিন্ন সংস্থার পারস্পরিক সমন্বয়ের প্রয়োজন বলে মনে করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ট্রেড বেজড সেক্টর, রিয়েল এস্টেট এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো প্লেসমেন্ট, লেয়ারিং এবং ইন্টিগ্রেশন পদ্ধতিতে মানিলন্ডারিং করে থাকে। তাই মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার রোধে প্রয়োজন বিভিন্ন সংস্থার পারস্পরিক সমন্বয়, সহযোগিতা, অভিজ্ঞতা ও ইনফরমেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, কঠোর তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণ।’

শনিবার (১০ জুন) সিআইডির সদর দফতরে ‘মানি লন্ডারিং: ট্রেন্ডস অ্যান্ড কমব্যাটিং দ্যা চ্যালেঞ্জে’ শীর্ষক এক সেমিনারে সিআইডি প্রধান এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘একটি দেশের সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, আর্থিক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা আনয়ন এবং দুর্নীতি দমনে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ খুবই জরুরি। মানি লন্ডারিং মামলা তদন্ত ও অর্থপাচার রোধে সিআইডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যা ইতোমধ্যে দেশ ও বিদেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। একইসঙ্গে সিআইডি’র তত্ত্বাবধান ও উদ্যোগে খুব শিগগির মানি লন্ডারিং মামলার ক্ষমতাপ্রাপ্ত তদন্তকারী সাতটি সংস্থার সমন্বয়ে একটি যৌথ কর্মশালার আয়োজনের কথাও বলেন তিনি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের হেড অব বিএফআইইউ (ডেপুটি গভর্নর) মো. মাসুদ বিশ্বাস, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের যুগ্ম পরিচালক এদিপ বিল্লাহ। সেমিনারে সিআইডির ডিআইজি (এইচআরএম) মো. মাইনুল হাসানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক ও প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. খান সরফরাজ আলী।

সেমিনারে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিশেষ করে মানি লন্ডারিংয়ের গতি-প্রকৃতি ও প্রতিরোধের কৌশল বিষয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।

সিআইডি’র উদ্যোগে ইতোমধ্যে তদন্তকারী ও তদন্ত তদারককারী কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিষয়ে সাতটি ব্যাচে মোট ৪৫০ জন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১০ জুন) সেমিনারটি আয়োজন করা হয়। সিআইডিতে কর্মরত বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে মানি লন্ডারিং সংক্রান্তে অপরাধ প্রতিরোধ, অপরাধীদের শনাক্ত, মামলার তদন্ত পরিচালনা, পারিবারিক এবং সামাজিক সচেতনতাসহ যাবতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। সেমিনারে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাপোর্ট নিশ্চিত করা, যাবতীয় ট্রেড সম্পর্কিত তথ্য সংরক্ষণ, ক্ষমতাপ্রাপ্ত সাতটি তদন্ত সংস্থার মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো, প্রযুক্তিগত উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানো।

এছাড়াও সন্দেহজনক লেনদেন কঠোর মনিটরিং ও রিপোর্টিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তির ব্যবহার, জি টু জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন, মানি লন্ডারিং বিষয়ে দেশব্যাপী প্রচার ও জনসচেতনতা বাড়ানো এবং প্রসিকিউশনের জন্য প্যানেল আইনজীবী নিয়োগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। সিআইডি প্রধান সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদ তুলে দেন।