সামুদ্রিক মাছের নিরাপদ প্রজনন ও উৎপাদন বাড়াতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে সমুদ্রে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এই নিষেধাজ্ঞা। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে সমুদ্র থেকে জাল উঠিয়ে তীরে ফিরতে শুরু করেছেন জেলেরা।
তবে জেলেরা বলছেন, বছরজুড়ে ইলিশের আকালসহ ঘূর্ণিঝড় মোখায় এক সপ্তাহ অলস সময় পার করে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। তাই অবরোধকালীন সময়ে প্রণোদনা বাড়াতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জেলেরা।
জানা যায়, সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া অধিকাংশ ট্রলার তীরে ফিরেছে। এছাড়াও কিছু সংখ্যক ট্রলার রাতের আগেই তীরে ফিরবে। পাথরঘাটার সমুদ্রে যাওয়া শত শত মাছ ধরার ট্রলার মৎস অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে নোঙর করা রয়েছে। জেলেরা জাল ও মাছ সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ির পথে রওয়ানা দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ট্রলার মেরামত ও রঙ করানোর জন্য ডকইয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছেন।
৬৫ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে বরগুনার ২৭ হাজার ২৭৭ জন জেলেকে ১ হাজার ৫২৬ মেট্রিক টন চাল সহায়তা দেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনে নিবন্ধিত প্রতি জেলে পাবেন ৮৬ কেজি করে চাল। এসময় যাতে অসাধু জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সমুদ্রে যেতে না পারে সে লক্ষ্যে কঠোর অবস্থানে থাকবে জেলা মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও প্রশাসন।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম থাকায় আজ মধ্যরাত থেকে সাগর ও নদী মোহনায় মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী ২৩ জুলাই। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মাছ আহরণ, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ। সাগরে গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সামুদ্রিক মাছের নিরাপদ প্রজনন ও উৎপাদন বাড়াতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই (৬৫ দিন) সমুদ্রে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য অধিদফতর। এ সময় ইলিশ শিকার ও পরিবহন সম্পূর্ণ অবৈধ। ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারে প্রতিবছর ৬৫ দিন মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চালু করা হয়। ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়। শুরু থেকেই এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে আসচ্ছেন জেলেরা।