রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা গতকাল রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। এবার অপেক্ষা ভোটের।
আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। এই সিটির ২২৯টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে।
ভোট উপলক্ষে নেয়া হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা। সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিতে সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় টহলে থাকবে পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন জানান, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে এবং ভোটকক্ষে সিসিটিভি থাকবে। তবে গোপন কক্ষে থাকবে না। ৯০ শতাংশ কেন্দ্রে এরইমধ্যে সিসিটিভি স্থাপন সম্পন্ন হয়ে গেছে। ঢাকায় নির্বাচন ভবন থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে ভোট পর্যবেক্ষণ করা হবে। ভোটের ফলাফল ট্যাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য সব কেন্দ্রে একটি করে ট্যাব সরবরাহ করা হচ্ছে।
রিটার্নিং অফিসার জানান, ২২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে যথেষ্টসংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। মাঠে থাকবেন ৬০ জন ম্যাজিস্ট্রেট। এরইমধ্যে নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন ৩৩ জন। এছাড়া ১১ প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল শেষ মুহূর্তে জমে ওঠে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচার। নির্বাচন পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, লাঙল মার্কার গণজোয়ার এসেছে। ইভিএম নিয়েও কোনো ধরনের জটিলতা নেই।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বলেন, ভোট শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে রংপুরবাসী। সিটির উন্নয়নের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট দেবে তারা।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৯ জন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়াও রয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল। এছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাসদের শফিয়ার রহমান, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সবারই দাবি, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন।
৯ মেয়র প্রার্থী ছাড়াও নারীদের জন্য ১১টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন এবং ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং নির্বাচন এলাকা ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।