ভারতীয় চোরাই চিনিতে সয়লাব বাজার

দেশে চিনিকল মালিকদের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির সুযোগে বাজার দখল করে নিয়েছে ভারতীয় চোরাই চিনি। বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে দেশি চিনির দর প্রতি কেজি ১২৬ টাকা নির্ধারিত থাকলেও, মাত্র ৯৪ টাকাতেই মিলছে ভারতীয় চিনি। চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনিতে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় মজুত করা চিনি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মিল মালিকরা।

সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় চিনির চালান আনা, বর্তমানে দেশে অনেকটা ওপেন সিক্রেট। সীমান্তে শিথিলতার সুযোগে বাংলাদেশের বাজার ভারতীয় চিনিতে সয়লাব। আবার দেশের গুদামগুলোতে এনে এসব ভারতীয় চিনির বস্তা বদল করে বাংলাদেশি রূপ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠিত শিল্প গ্রুপগুলোর বস্তাতে ভরেই বিক্রি হচ্ছে এ ভারতীয় চিনি।

মিল মালিকদের কারসাজির মুখে রোজার আগে প্রতিমণ চিনি ৫ হাজার টাকা অতিক্রম করে যায়। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চিনির বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি সপ্তাহেই বাড়ানো হয়েছে চিনির দাম। আর এখন তা ৪ হাজার ৬৫০ টাকা হিসাবে প্রতি কেজির দাম ১২৬ টাকায় নেমে এসেছে। এমনকি মিলগুলোতে মজুতের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ঈদের পর চিনির দাম ১৬০ টাকায় নেয়ার পরিকল্পনা করছিল মিল মালিকেরা। চোরাই পথে আসা ভারতীয় চিনি প্রতিমণ ৩ হাজার ৬০০ টাকা হিসাবে ৯৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর তাই মজুত করা চিনি মালিকেরা অনেকটা কম দামে ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স পরিচালক আলমগীর পারভেজ বলেন, ভারতীয় চিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করায়, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে এই চোরাই চিনিগুলো বিক্রি হচ্ছে। ফলে দেশীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
 
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আলতাফ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক মুহাম্মদ আলতাফ এ গাফ্ফার বলেন, চোরাই ব্যবসায়ীদের জন্য বৈধ উপায়ে ব্যবসা করা মানুষগুলো বাজার  ধরতে হিমশিম খাচ্ছে। পুরো বাজার এই চোরাই চিনি ব্যবসায়ীদের দখলে।
 
চট্টগ্রামে চলতি মাসে পুলিশ এবং র‌্যাবের পৃথক দু’টি অভিযানে অন্তত এক হাজার মেট্রিক টন ভারতীয় চিনি জব্দ হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে ভারতীয় চিনি পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের দাবি, মেহেরপুর-ঝিনাইদহ এবং কুমিল্লা-আখাউড়াসহ সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ৫ হাজার মেট্রিক টনের বেশি চিনি বাংলাদেশ ঢুকছে।