বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সংসদে নতুন একটি আইন পাস হয়েছে। এখন থেকে বিশ্বের বৃহত্তম এ মুসলিম দেশে বিয়ের আগে দৈহিক সম্পর্কের শাস্তি হিসেবে দেয়া হবে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড।
এই আইনের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে কটূক্তি করা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা প্যানকাসিলা নামে পরিচিত জাতীয় আদর্শের বিপরীত মতামত প্রকাশের জন্য শাস্তি প্রণয়ন রাখা হয়েছে।
আইনটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতা বামবাং উরুয়ান্তো জানান, নতুন এ আইন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ায় আসা বিদেশিদের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
তবে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া কেউ এ আইনের আওতায় পড়বেন না। কেবল অভিযুক্তদের নিকটাত্মীয়রা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কারও স্বামী-স্ত্রী যদি অন্য কোনো নারী-পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ান, তাহলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে পারবেন। অন্যদিকে, অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে প্রধান সাক্ষী হিসেবে অভিযোগ দিতে পারবেন তাদের মা-বাবা।
কয়েক দশক ধরে আইনটির খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে ইন্দোনেশিয়ার উপ-আইনমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিয়েজ গণমাধ্যমকে বলেন, ইন্দোনেশিয়ান মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতি রেখে আইনটি প্রণয়ন করতে পেরে আমরা গর্বিত। আশা করি, এর মাধ্যমে গুরুতর কিছু অপরাধ দমন করা যাবে।
রয়টার্সের খবর অনুসারে, দেশটির সংসদে মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সর্বসম্মতভাবে এই আইন পাস হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে যখন এই আইনের খসড়া করা হয়, ইন্দোনেশিয়াজুড়ে শিক্ষার্থীরা তখন বিক্ষোভ করে। সমালোচকরা বলছেন, এটা ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করবে।
রয়টার্স বলছে, দেশটির অনেকে আইনটিকে ইতিবাচক হিসেবে নিলেও, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এটি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এ ধরনের আইন পাস হলে সারা বিশ্ব ইন্দোনেশিয়াকে অন্য চোখে দেখবে, যা পর্যটনখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এরইমধ্যে ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ইসলামী সংগঠন খসড়া আইনটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।