বিশ্ব এখন জীবন-মরণের লড়াইয়ে: জাতিসংঘ মহাসচিব

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান বিরূপ প্রভাবের প্রেক্ষিতে মানবতাকে অবশ্যই হয় সহযোগিতা নতুবা ধ্বংস- এ দুটোর একটিকে বেছে নিতে হবে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) মিশরের লোহিত সাগর রিসোর্ট শারম-আল-শেইখে বৈশ্বিক উষ্ণতারোধ সংক্রান্ত জাতিসংঘের কপ-২৭ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

কোভিড মহামারি ও ইউক্রেনে রুশ অভিযান থেকে শুরু করে জলবায়ূ পরিবর্তন পর্যন্ত বিপর্যয়ে পর্যুদস্তু অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তোলপাড়ের এই চরম সংকটের প্রেক্ষাপটে গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্ব এখন জীবন-মরণের লড়াইয়ে রয়েছে।’

গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্ব মানবতার কাছে এখন সহযোগিতা অথবা ধ্বংস- এর যে কোনো একটিকে বেছে নেয়ার সময়।  ‘জলবায়ু সংহতি চুক্তি’ অথবা ‘যৌথ আত্মহত্যা চুক্তি’ যে কোনো একটিকে বেছে নিতে হবে।

জাতিসংঘ প্রধান ধনী দেশ ও উদীয়মান অর্থনীতির মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘চুক্তির মাধ্যমে কার্বন নির্গমন কমাতে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে উচ্চাভিলাষী প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রায় প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রাখতে হবে।’

গুতেরেস আরও বলেন, যে শিশুটি আসছে তাকে কী বলবো।  যখন জিজ্ঞাসা করবে, আমরা পৃথিবীর জন্য কী করেছি? আমরা আমাদের জীবনের সঙ্গে লড়াই করছি আর হেরে যাচ্ছি।  বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।  আমরা যে শঙ্কা করছি ওই বিন্দুর দিকেই যাচ্ছি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে আমরা নরকের জলবায়ুর মহাসড়কে আছি, আমাদের পা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।’

২৭তম জলবায়ু সম্মেলন- যার আনুষ্ঠানিক নাম কনফারেন্স অব পার্টিজ-২৭ বা কপ-২৭।  এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে ১৯৮টি দেশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।  জাতিসংঘের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকারি কর্মকর্তা ও পরিবেশ কর্মীরাও রয়েছেন।  কার্বন নিঃসরণে এবার জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।  বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখা প্রধান চ্যালেঞ্জ বিশ্বনেতাদের সামনে।

এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, চলতি শতাব্দীতে গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে মারাত্মক খাদ্য ঘাটতিতে পড়বে বিশ্ববাসী।