বিক্ষোভে সমর্থন: ইরানে খ্যাতিমান অভিনেত্রী গ্রেপ্তার

ইরানে তিন মাস ধরে চলা বিক্ষোভে সমর্থন দেয়ায় এক খ্যাতিমান অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।  ২০১৬ সালে অস্কারজয়ী ‘দ্য সেলসম্যান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন তারানেহ।

৮ ডিসেম্বর নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ছবি শেয়ার করেন তারানেহ।  তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনাদের নীরব থাকার মানে হলো, দমন–পীড়ন ও দমন-পীড়নকারীদের সমর্থন করা।’

পোস্টের ক্যাপশনে তারানেহ লেখেন- ‘যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা এই রক্তপাতের ঘটনা দেখছে, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এর অর্থ দাঁড়ায়, মানবতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন।’

ইরানি গণমাধ্যম ইরনা জানায়, বিক্ষোভ চলাকালে অভিযুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি মুহসিন শিকারির সাথে সংহতি প্রকাশ করে এই পোস্টটি করেন তিনি।

পোস্টটি করার এক সপ্তাহ পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।

রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, তারানেহ তার দাবির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো নথি প্রদান করতে পারেননি।  তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  এতে জানানো হয়, ‘উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু প্রকাশের জন্য আরও বেশ কিছু ইরানী তারকাকে তলব করেছে বিচার বিভাগ।  কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।’

ইরানে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভে তেহরানের একটি রাস্তা অবরুদ্ধ করা এবং দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্যকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় মুহসিন শিকারিকে।  ইরানের একটি আদালত তাকে অভিযুক্ত করার পর ৯ ডিসেম্বর মুহসিনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।  সেই মুহসিন শিকারির মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদেই আওয়াজ তোলেন অভিনেত্রী তারানেহ।

কৈশোর থেকেই ইরানি চলচ্চিত্রে কাজ করছেন এই অভিনেত্রী।  সম্প্রতি তিনি ‘লিলাস ব্রাদারস’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।  চলতি বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে নভেম্বরে হেঙ্গামেহ গাজিয়ানি এবং কাতায়ুন রিয়াহি নামে আরও দুই বিখ্যাত অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।  গ্রেপ্তার করা হয় ইরানের ফুটবলার ভোরিয়া গাফৌরিকেও।  অভিযোগ ছিল, সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তারা।  যদিও তিনজনকেই পরে ছেড়ে দেয়া হয়।

কঠোর পর্দাবিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরানে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনিকে (২২) গ্রেপ্তার করে নীতি পুলিশ।  গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।