বাংলাদেশের ওপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান রাইলি রুশো। তার ৫৬ বলে ১০৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে রান পাহাড়েই চাপা পড়েছে সাকিব আল হাসানের দল। রাইলি রুশোর সেঞ্চুরির সাথে কুইন্ট ডি ককের ৩৮ বলে ৬৩ রানে ভর করে বাংলাদেশের সামনে ২০৬ রানের পাহাড়সম টার্গেট দিয়েছে প্রোটিয়ারা।
বাংলাদেশি বোলারদের ওপর দিয়ে তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ৫২ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন রুশো। অথচ প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান খরচায় টেম্বা বাভুমাকে নুরুল হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। ঠিক তার পরের ওভার থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হন রুশো ও কক।
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে বোলিংয়ে পাঠিয়েছিল প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। শুরুতেই নিজের উইকেট খুইয়ে তিনিই বিপদে ফেলেছিলেন দলকে। তবে তার উইকেটটি যেন শাপেবর হয়ে এলো প্রোটিয়াদের জন্য। বাভুমা আউট হওয়ার পর কুইন্টন ডি কক আর রুশো মিলে খাপখোলা তলোয়ারের মতো ব্যাট চালিয়েছেন টাইগার বোলারদের ওপর দিয়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টস হেরে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও বাধার সৃষ্টি করেছে বৃষ্টি। খেলা শুরুর পর পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে গিয়ে বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। প্রায় মিনিট পনের পর বৃষ্টি থেমে গেলে আবারও মাঠে নামে দুই দল।
বোলিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ফিরিয়ে বাংলাদশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। তবে এরপর আর তেমন সুবিধা করতে পারেননি অবশ্য।
প্রথম ওভারেই উইকেট নেওয়ার পর আর দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটারদের তোপের মুখেই পড়ে বাংলাদেশ। ডি কক আর তিনে নামা রুশো মিলে তান্ডব চালিয়েছেন টাইগার বোলারদের ওপর। বাংলাদেশের কোনো বোলারই থামাতে পারেনি প্রোটিয়া ব্যাটারদের তাণ্ডব, বরং বৃষ্টি এসেই থামিয়েছে তাদের।
মিরাজের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন ডি কক। তারপর থেকে যেন খাপখোলা তলোয়ারের মত চলেছে ডি কক-রুশোর ব্যাট। প্রথম ওভারে উইকেট তুলে নিলেও তাসকিনের করা তৃতীয় ওভার থেকেই ২১ রান তুলেছেন দুই ব্যাটার মিলে। চতুর্থ ওভারে হাসান মাহমুদ বোলিংয়ে এসেও সুবিধা করতে পারেননি তেমন।
মিরাজের করা পঞ্চম ওভার থেকে দুই ছক্কায় রুশো একাই তুলেছেন ১৪ রান। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারের প্রথম তিন বল খেলা হওয়ার পরি এসসিজির আকাশজুড়ে বৃষ্টি নামায় বন্ধ হয়ে যায় খেলা।
বৃষ্টির আগে ৫.৩ ওভারে ১ উইকেটেি ৬০ রান তুলে ফেলে দক্ষিন আফ্রিকা। বৃষ্টির কারণে প্রায় মিনিট পনের মতো বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হলে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৬৩ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
পাওয়ার প্লে শেষ হলেও রুশো-ডি ককের তান্ডব আর শেষ হয়নি। ডি-ককের চেয়ে রুশোই ছিলেন বেশি আগ্রাসী। ১০ ওভারেই প্রোটিয়ারা স্কোরবোর্ডে তিলে ফেলে ৯১ রান। ২ চার আর ৪ ছক্কায় রুশো তুলে নেয় নিজের ফিফটিও।
ফিফটির পর যেন আরও মারমুখী হয়েছেন রুশো। সাকিবের করা ১১তম ওভার থেকে ১ চার আর ২ ছক্কায় রুশো তোলে ২১ রান।
১৩তম ওভারে গিয়ে ফিফটি তুলে নেন ডি-ককও। হাসান মাহমুদের ওভারের দ্বিতীয় বলে মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেই ৩৩ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেনে প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক।
পরের ওভারে তাসকিনের ওপর দিয়ে আবারো তান্ডব চালিয়েছেন দুজন মিলে। ডি ককের ১ ছয়ের সঙ্গে রুশোর তিন চারে ওই ওভার থেকে ওঠে ২৩ রান।
১৫তম ওভারে পার্ট টাইমার আফিফের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। অবশেষে আফিফই বাংলাদেশকে এনে দেন কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু। ৩৮ বলে ৬৩ রান করা ডি কককে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান আফিফ। ১৬৩ রানের জুটি ভেঙে দলীয় ১৭০ রানে আউট হন ডি-কক।
সাকিব আলা হাসানের ১৭তম ওভারে গিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন রুশো। ওভারের চতুর্থ বলটি পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই ১ রান নিয়ে ৫২ বলে নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন প্রোটিয়া এই ব্যাটার।
ওই ওভারের প্রথম বলে অবশ্য ট্রিস্টান স্টাবসকে হারিয়েছিলো আফ্রিকা। তপবে রুশোর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ভর করে রান পাহাড়ের দিকেই ছুটছে প্রোটিয়ারা।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার ৫ উইকেটে ২০৫ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে প্রথম ২ ওভারেই ২৬ রান তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।