বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টেনে নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শাপলা হলে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলেই দেশে উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। এ দেশকে আর কেউ পেছনে টেনে নিতে পারবে না।
সরকার প্রধান বলেন, আমার পথ চলা এত সহজ ছিল না। অনেক চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাত, গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলা, অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। তারপরও আমি হাল ছাড়িনি। যার ফলে আজকে বলতে পারি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্ব পরিবর্তনশীল, এই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আজকে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ, গবেষণার যুগ। আমি ২১ বছর পর যখন ক্ষমতা পেলাম, তখন আমি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিলাম। একটা প্রজেক্ট নিয়েছিলাম নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। শিক্ষার্থীরাই শুধু শিক্ষা পাবে তা না, বয়স্করাও যাতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, এক একটা জেলাকে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা দিয়ে অনেকটা সফল হয়েছিলাম। পাঁচ বছর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এ প্রকল্প বাদ করে দেয়।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ করব বলে ঘোষণা দেই, তারপর থেকে আমরা উদ্যোগ নেই। আজকে আমরা সফল হয়েছি। আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আধুনিক প্রযুক্তিক জ্ঞানের সঙ্গে যদি আমরা তাল মিলিয়ে না চলতে পারি তাহলে সামনের দিকে এগোবো কীভাবে? আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছিলাম বলে করোনা মোকাবিলা আমাদের জন্য সহজ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। এটা আছে বলেই আজকে আমাদের দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমাদের সাক্ষরতার হার ৭৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমি প্রথমে সরকারে এসে দেখি এখানে গবেষণার জন্য কোনো ফান্ড নেই। কোনো টাকা নেই, গবেষণার দিকে কারো দৃষ্টি নেই। এমনকি বিজ্ঞানের ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া যায় না, এমন একটা অবস্থা ছিল। আমাদের প্রায়োরিটি ছিল কৃষি, খাদ্য নিশ্চিত করা। কৃষি গবেষণায় আমরা সফল হলাম। তিন চার বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সক্ষম হলাম। বাংলাদেশের গবেষকরা সব উৎপাদন করতে পারে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের যে মেধা, সেই মেধা বিকাশের সুযোগ দিলে এই দেশ আর কখনো পেছাতে পারবে না। এগিয়ে যাব এটাই আমাদের বাস্তবতা।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এর আগে, মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৫২ লাখ ১৪ হাজার ৬৫০ শিক্ষার্থীকে ১ হাজার ১২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা অনলাইন মাধ্যমে অভিভাবকদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। স্নাতক পর্যায়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮৯ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে ৭৯ কোটি ৪৭ লাখ ৬১ হাজার ৫৬০ টাকা। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩ জাতীয় পর্যায়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সেরা ১৫ শিক্ষার্থীর হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
এমএফ