বাঁশখালীতে টমেটোর বাম্পার ফলন, ন্যায্য মুল্য ও চাহিদা থাকায় কৃষকের মুখে হাসি

আকারে গোলাকার, গায়ের রং লালচে, কাঁচা অবস্থায় হালকা সবুজ রঙের বহুপুষ্টিগুন সমৃদ্ধ সবজি টমেটো। একদা শীতকালীন সব্জি টমেটো প্রযুক্তিগত উন্নয়নে টমেটো এখন বারোমাসি সব্জি। পাওয়া যায় সবসময়। যে কোন তরকারিতে স্বাদ বাড়াতে অতুলনীয় টমেটোর বাংলা নাম “বিলেতি বেগুন”। ব্যবহারিক জীবনে বিলেতি বেগুন নামে চাইলে অধিকাংশ লোকই চিনবেনা। ইতিমধ্যে বাজারে সয়লাব বাঁশখালীর টাটকা টমেটো।

বাঁশখালীতে বেশিরভাগ টমেটো উৎপাদিত হয় পশ্চিমাঞ্চল তথা সাগর উপকুলীয় এলাকায়। এসব টমেটো আঞ্চলিক চাহিদা পুরন করে জেলা শহরে রপ্তানি হচ্ছে। প্রান্তিক চাষীরা ন্যায্য মুল্য পাওয়ায় অত্যন্ত খুশি। চাহিদা ও লাভ বিবেচনায় কৃষকেরা টমেটাে চাষের দিকে ঝুকছে।

উপজেলার প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়নে কমবেশি টমেটো চাষ হলেও খানখানাবাদ, বাহারছড়া, ছনুয়া, কাথরিয়া, গন্ডামারা ইউনিয়নে বিশাল এলাকা জুড়ে টমেটো ক্ষেত দেখা মেলে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে ৩৫০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। দেশজুড়ে বারি-৪,৫,৮, নিউ রুপালী ১, প্রফট আার্লি, বাহুবলী, টিপু সুলতান, দুর্জয়, রোমা ভি এফ, গ্রেট পেলে সহ বিভিন্ন জাতের টমেটোর চাষ হলেও বাঁশখালীতে প্রফিট আর্লি, বারি , বাহুবলী, দুর্জয় জাতের টমেটোর চাষ বেশি হয়। আশ্বিন মাসের প্রথম দিকে টমেটোর চারা রোপন করে চাষীরা। কার্তিক থেকে পৌষ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়।

গন্ডামারা ইউনিয়নের প্রান্তিক টমেটো চাষী মোঃ কবির, জাহাংগীর আলম ও আব্দুল মান্নান এর সাথে কথা বলে জানা যায় , প্রতি কানি (৪০ শতক) টমেটো চাষ করতে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় হয়ে থাকে। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে টমেটো বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে এসেছে। বাকী সময়ের বিক্রির টাকা লভ্যাংশ হিসেবে স্থিতি থাকবে। এই মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফলন ভাল হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছে। একদিন অন্তর ক্ষেতে কীটনাশক ছিটাতে হয়। সার প্রয়োগ করতে হয় সময়মতো। শ্রমিকের মজুরী, সার, কীটনাশক এর দাম বেশি হওয়ায় ব্যয় বেড়েছে।

টমোটো চাষীদের দেয়া তথ্যমতে চলতি মৌসুমে প্রফিট আর্লি ও দুর্জয় এই দুই জাতেই ভাল ফলন হয়েছে। প্রথম দিকে প্রতি কেজি টমেটো ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন কেজি প্রতি কেজি ৬৫-৭৫ টাকায় পাইকারী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি হচ্ছে। সামনে আরো এক মাস টমেটো তুলতে পারবে বলে তারা আশাবাদী। এতে চাষীরা আশানুরূপ লাভবান হবে।

বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক বলেন, বাঁশখালীতে চলতি মৌসুমে উপজেলা জুড়ে ৩৫০ হেক্টর জমিতে টমেটো আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৪০-৫০ টন টমেটো উৎপাদিত হবে বলে আশাবাদী। মৌসুমের প্রথমদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আরো বেশি লাভবান হতো। কৃষকরা পর্যাপ্ত ফলন ও ন্যায্যমুল্য পাওয়ায় অত্যন্ত খুশি।