নতুন বই ছাপানো নিয়ে এখনও লেজেগোবরে অবস্থায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের তৎপরতা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হবে ভোটকেন্দ্র। নির্বাচনী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন শিক্ষকরা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, বছরের প্রথম দিনে এবার কি শিক্ষার্থীরা নতুন বই উৎসব থেকে বঞ্চিত হবে?
সেই প্রশ্নের উত্তরে ২৬ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে খোদ শিক্ষামন্ত্রী জানান, নির্বাচনের কারণে বই উৎসবটা এবার ১০-১১ তারিখেও হতে পারে।
এ নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষাবিদরা অসন্তুষ্টির সুরে প্রতিক্রিয়া জানান। এনসিটিবি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দেখা দেয় ‘অস্বস্তি’। তবে সব সংশয়-অস্বস্তি পেছনে ফেলে ১ জানুয়ারিই বই উৎসব করার পথে হাঁটছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বই লেখা, ছাপানো এবং উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করাটা আমাদের কাজ। বই উৎসব কবে হবে, তা ঠিক করে সরকার। তবে অংশীজন হিসেবে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আমাদের সবসময় যোগাযোগ থাকে, বৈঠক হয়। এ পর্যন্ত আমার কাছে যতটুকু তথ্য, তা হলো, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি বই উৎসব হয়, এবারও সেটাই হবে বলেই জানি। এর ব্যতিক্রম কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না, সেটা আমরা জানি না।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক-১ শাখার একজন উপসচিব জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটা নিয়ে অস্পষ্টতা ছিল। বই ছাপানোও শেষ হয়নি বলে জানিয়েছিল পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। তবে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় ১ তারিখেই (জানুয়ারি) বই উৎসব করার প্রস্তুতি চলছে। বড় কোনো ঝামেলা না হলে বছরের প্রথম দিনে এটা শুরু হবে।’
ধাপে ধাপে বই পাবে শিক্ষার্থীরা
বই উৎসব ১ জানুয়ারি শুরু হলেও সব বই সেদিন পাবে না শিক্ষার্থীরা। এমনকি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে কোনো বই নাও দেওয়া হতে পারে প্রথম দিন। অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ১০-১২ তারিখে বই পেতে পারে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে চলতি ডিসেম্বর মাসের বাকি ১৯ দিনে বই ছাপানোর কাজ কতটা গুছিয়ে উঠতে পারছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে হয়তো ক্লাস শুরু হতে পারে। ক্লাস শুরুর আগেই তারা ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে চান। এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, বই তো সব একদিনে হাতে তুলে দেওয়াটাও কঠিন। এটা নিয়ে অযাচিত সমালোচনা দেখি আমরা অনেক সময়। বিষয়টি বুঝতে হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই কিন্তু সব শিক্ষার্থী শতভাগ বই পেয়ে যায়। শুধু সমালোচনা করার অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এ প্রসঙ্গে এনসিটিবি চেয়ারম্যান ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘ধাপে ধাপে বই দেওয়াটা তো এবারই প্রথম না। সব বই জানুয়ারির ১ তারিখে দিতে হবে এটাও কোনো নির্দেশনায় নেই। ওইদিন আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলাম। একটু সময় নিয়ে হলেও সঠিকভাবে বই বিতরণ করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি।’