দেশে সরকারি দপ্তরগুলোতে সহজে কোনো সেবা পাওয়া যায় না: ক্যাব

জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদ পেতে বিড়ম্বনা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি

দেশে সরকারি দপ্তরগুলোতে সহজে কোনো সেবা পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ বুধবার (১৯ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করে সরকারি দপ্তরে সেবা পেতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিয়ের নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, চাকরিতে নিয়োগ, ব্যাংক হিসাব খোলা, গ্যাস-পানি-টেলিফোন-বিদ্যুতের সংযোগ, ট্রেড লাইসেন্স, জমির নিবন্ধনসহ ১৬টি মৌলিক সেবা পেতে জন্মসনদ ও নাগরিক সনদ (এনআইডি) লাগে। অনেকে ঘুষ দিয়ে বা দালাল ধরেও সঠিক সময়ে জন্মসনদ, নাগরিক সনদ পান না।

সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যান বা পৌরসভার মেয়ররা অনেক সময় এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক না হবার কারণে জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদ পেতে মানুষের বিডম্বনার শেষ নাই। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অনাকাঙিক্ষত। তাই জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদ পেতে নাগরিকের ভোগান্তি এবং বিড়ম্বনা রোধ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্য সনদ পেতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবার দাবি জানানো হয়েছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটির দেয়া বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু ও সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কয়েকদিন আগে দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত হলেও ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির সমাধানের কথা বিবেচনায় নেয়া হয় নি। অন্যদিকে সেবা প্রদানকারীদের সীমাবদ্ধতা এবং সক্ষমতা-জটিলতা সমাধানের কাঙিক্ষত কোন সুপারিশ ছাড়াই দায়সারা গোছের দিবস উদযাপন করা হয়। যা সময়ের প্রয়োজনের সাথে কোনভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দেশে কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সেবা পেতে জন্মনিবন্ধন সনদ এখন অনেকটা বাধ্যতামূলক হলেও এই সেবা পেতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ২০০১ সাল থেকে কার্যক্রম শুরুর ২০ বছর পার হয়ে গেলেও একটি কার্যকর জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এই সনদ পেতে যে ভোগান্তি, সেটিই প্রমাণ করে, এ দেশে সরকারি দপ্তরগুলোতে সহজে কোনো সেবা পাওয়া যায় না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা প্রতিনিয়তই প্রকাশিত হলেও প্রতিকার নাই, যা খুবই দুঃখজনক।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ২০২২ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন অত্যাবশ্যকীয় করা হয়েছে। কিন্তু জন্মনিবন্ধন সনদের জটিলতায় মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির আবেদন করা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির আবেদন করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ সংগ্রহের হিড়িক পড়লেও সার্ভার জটিলতাসহ নানা অজুহাতে চাহিদামতো জন্মনিবন্ধন পাচ্ছে না।