দুই সিটির ভোট শেষ, চলছে গণনা

দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে সিলেট ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা।

বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ, চলে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সব কেন্দ্রের ভোট পরিস্থিতি সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা এ তথ্য জানিয়েছেন। ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো ছিল দাবি করে তিনি জানান, দুই-একটি স্থানে সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছে।

এদিকে সকাল থেকেই রাজশাহী ও সিলেট নির্বাচনে ছিল ঢাকার চোখ। কেন্দ্রে কেন্দ্রে স্থাপিত সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত আহসান হাবীব খান, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা নির্বচন ভবনের কন্ট্রোল রুমে বসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচন

বৃষ্টির কারণে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ভোট শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টা পরই শুরু হয় বৃষ্টি। বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি চলে পৌনে ১২টা পর্যন্ত।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থী তিন জন লড়ছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার (গোলাপ ফুল)। তবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী মুরশিদ আলম (হাতপাখা) আগেই নির্বাচন বয়কট করেছেন।

এবার ২৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১১ জন। একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। এখানে ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ছয়জন। তৃতীয় লিঙ্গের একজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন।

১৫৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটকক্ষ ছিল ১১৫৩টি। ১৪৬৩টি ক্যামেরার মাধ্যমে রাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ মনিটরিং করা হয়।

সিলেট সিটি নির্বাচন

সিলেট সিটিতে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন হচ্ছে। আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত নজরুল ইসলাম বাবুলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।

মেয়র পদে অন্য প্রার্থী হলেন– ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা); জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া); মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট); মো. শাহজাহান মিয়া (বাস) ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা (হরিণ)।

এখানে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০ এবং নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন। মেয়র পদে আট, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দুই সিটির নির্বাচনে ঢাকার ইসি ভবনে মোট ২৩টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে একই সঙ্গে ৩৬৮টি সিসি ক্যামেরায় ২৫২০টি ভোটকক্ষ পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রতি ডিসপ্লে দশ সেকেন্ড পরপর অটো রোটেড করে ৩৪৫টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি করে আর কেন্দ্রপ্রতি দুটি করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ চলে।

সর্বশেষ বরিশাল, খুলনা, গাজীপুর, রংপুর ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, ঝিনাইদহ পৌরসভা, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনার ধারাবাহিকতায় রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিসি ক্যামেরায় চলে ভোটের মনিটরিং।

এমএইচএফ