চতুর্থ দিনেই নির্ধারণ হতে যাচ্ছে ঢাকা টেস্টের ফল। দুই দলই দ্রুত উইকেট হারানোয় বড় স্কোর গড়তে পারেনি কোনো দল। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ২২৭ রানের পর ভারত অলআউট হয় ৩১৪ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশ বড় কোনো স্কোর গড়তে পারেনি। তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে সাকিব আল হাসানের দল আউট হয়ে যায় মাত্র ২৩১ রানে। ফলে ভারতের জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ১৪৫ রান।
তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারতও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তৃতীয় দিনে মাত্র ২৩ ওভার খেলে ৪৫ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারাতে হয়েছে লোকেশ রাহুলরে দলকে। ফলে চতুর্থ দিনে এসে জয়ের পেন্ডুলাম দুলছে দুই দলের দিকেই। জিততে হলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৬ উইকেট আর ভারতের মাত্র ১০০ রান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মতো সারাদেশের মানুষ এখন রোমাঞ্চকর শেষের অপেক্ষায়।
দিনের তৃতীয় সেশনে দারুণ লড়াই করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। একে একে তুলে নিয়েছেন লোকেশ রাহুল, পুঁজারা, শুভমান গিল ও বিরাট কোহলির উইকেট। এর মধ্যে তিনটিই নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ আর একটি নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
ছোট লক্ষ্য হওয়ায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখনো সফরকারীদের হাতে। সেখান থেকে ম্যাচের নাগাল পেতে বাংলাদেশি বোলারদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ জয় থেকে আর মাত্র ১০০ রান দূরে ভারত। তাই চতুর্থ দিন বোলারদের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ।
৮০ রানে পিছিয়ে থেকে আজ টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। ভারতের লিড টপকে বড় সংগ্রহ পাওয়াই আজ মূল লক্ষ্য ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু সেই লক্ষ্যে খুব একটা সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ।
গতকাল শুক্রবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হোসেন। কিন্তু আজ দিনের শুরুতেই ভাঙল এই জুটি। ফিরে গেলেন শান্ত। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অশ্বিনের এলবির ফাঁদে পা দেন এই ওপেনার। ৩১ বলে ৫ রান করে শেষ হয় তাঁর ইনিংস।
দীর্ঘদিন পর সাদা পোশাকে ফেরা মুমিনুল প্রথম ইনিংসে আশা দেখালেও এই ইনিংসে পারেননি হাল ধরতে। দলীয় ২৬ রানে সিরাজের কট-বিহাইন্ডে উইকেট বিলিয়ে দেন মুমিনুল(৫)। টিকলেন না সাকিব আল হাসানও। তাঁকে শিকার বানান উনাদকাট।
এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু উইকেটে থিতু হয়ে লড়াইয়ের আভাস দেন জাকির। হাফসেঞ্চুরির পর তাঁকেও আর স্থায়ী হতে দেয়নি ভারত। ৫১ রান জাকিরকে বিদায় করেন যাদব। জাকিরের পরের লড়াইটা করেন লিটন দাস।
তাঁর ব্যাটে ফের আশা দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত দলীয় ২১৯ রানে। তবে তাঁর ইনিংসে ভর করেই প্রায় দেড়শর কাছাকাছি টার্গেট দিতে পারে বাংলাদেশ। সাত বাউন্ডারিতে ৯৮ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। লিটন ফিরলে বেশিসময় আর টেকেনি বাংলাদেশের ইনিংস। থেমে যায় ২৩১ রানে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার তৃতীয় সেশনে এসে ৩১৪ রানে থামে ভারত। অতিথিরা লিড পায় ৮৭ রানের। এই লিডের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ৭ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন মুমিনুল হক। বাকিদের ব্যর্থতায় বেশিদূর এগোতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল।