চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঠিকাদারের গাফিলতিতে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে নির্মাণাধীন সেতুর পাশের বিকল্প সড়ক। এই পর্যন্ত তিনবার ভেঙেছে সড়কটি। এর আগে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দুই দফা সংস্কার হয় সড়কটি।
শনিবার (২৬ আগস্ট) রাতের অতিবৃষ্টিতে তৃতীয় দফায় ভেঙে দুপাশের মানুষের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সড়কটি ব্যবহার করা কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তি পোহাতে হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কোনো তদারকি নেই বলেও জানা গেছে।
উপজেলার জোরারগঞ্জ থেকে বাংলাবাজার বুরবুরিয়া ঘাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের দেওয়ানপুর গ্রামের অংশের বারমাসিয়া ছড়ার ওপর নির্মিত নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়কটি তৈরি করা হয়। কিন্তু বিকল্প সড়কটির নিচে পানি নিষ্কাশনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায়।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে এলজিইডির অধীনে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ মিটারের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবছার কনস্ট্রাকশন। মানুষের চলাচলে ভোগান্তি কমাতে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে তৈরি করা হয় বিকল্প সড়ক। সে সময় নিচু জায়গায় যথাযথ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে বিকল্প সড়ক নির্মাণে অনেকেই আপত্তি তুলেছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনগণের আপত্তিকে তোয়াক্কা না করে দুটি পাইপ বসিয়ে বিকল্প সড়ক করেন। ফলে ওই নিচু ও খানা খন্দকে ভরা সড়ক দিয়ে মালামাল পরিবহনে নানা ভোগান্তির শিকার হতে হতো। নির্মাণের পর থেকে ভোগান্তি নিয়ে পারাপার হতে পারলেও গতকাল পাহাড়ি ঢলে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় তিনটিমোটর সাইকেল খালের পানিতে ভেঙে গিয়ে আরোহীরা আহত হন।
স্থানীয় বাবুল সেন নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি দায়সারাভাবে করা হয়েছে। তাই পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শত শত মানুষ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবছার কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার এনামুল হক বলেন, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যায়। পানি প্রবাহ কমলে সড়কটি সংস্কার করবো।
জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাষ্টার বলেন, বিকল্প সড়ক ভেঙে মানুষের দুর্ভোগের কথা শুনে আমি দুই বার নিজ অর্থায়নে সংষ্কার করে দিয়েছি। গত রাতের অতিবৃষ্টিতে আবারও ভেঙে যায় বলে জেনেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সেতু নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীকে পরিদর্শনের জন্য পাঠাবো। দ্রুত সময়ে বিকল্প সড়ক সংস্কারসহ সেতুর কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।