ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী বেনজির জাহান মুক্তাকে হত্যার দায়ে মো. সোহাগ মীর (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডেরে আদেশ দিয়েছেন আদালত।একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টায় জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলামের আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি সোহাগ উপস্থিত ছিলেন। আদালতের বেঞ্চসহকারী মো. রুস্তম আলী খান রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সোহাগ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের আনিপাড়া গ্রামের ছোবাহান মীরের ছেলে। সে ঢাকা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের কাজ করতো।
আদালতে মামলার নথি পর্যবেক্ষণ ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মান্নান রসুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নলছিটি উপজেলার বাড়ইকরণ গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদারে মেয়ে ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্রী বেনজির জাহান মুক্তার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়ের পর সোহাগের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছু দিন সম্পর্ক ভালো চললেও এরপর শুরু হয় দ্বন্দ্ব।
২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে সোহাগ ঢাকা থেকে এসে মোবাইল ফোনে মুক্তাকে তাদের বাড়ির কাছে কাপড়িয়া বাড়ির নতুন রাস্তার কাছে ডেকে আনে দেখা করার জন্য। ওই মেয়ে আসার পর কথাবার্তার একপর্যায়ে চাকু একাধিক পোঁচ দেয়। মুক্তা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সোহাগ পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
ঘটনার দিন রাতে নিহতের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার তিন দিন পর ৭ ফেব্রুয়ারি নলছিটি থানা পুলিশ ঝালকাঠি ডিবির সহায়তায় আসামিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। পর দিন আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০২০ সালের ৫ মার্চ নলছিটি থানার পরিদর্শক আব্দুল হালিম তালুকদার বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এলে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ৫৩ কার্যদিবসে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।