জেল থেকে বেরিয়ে নলিনী বললেন, ‘আমি অনুতপ্ত’

৩১ বছর কারাবাসের পর জেল থেকে বেরিয়ে দুঃখপ্রকাশ করলেন রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় অপরাধী নলিনী শ্রীহরণ।  তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন বিস্ফোরণে যারা প্রাণ হারিয়েছেন,  তাদের পরিবারের জন্য তিনি দুঃখিত।  যা হয়েছে, তার জন্য ‘আমি অনুতপ্ত’।

সংবাদমাধ্যমে নলিনী বলেন, ‘ওঁদের জন্য আমি খুবই দুঃখিত।  এটা নিয়ে আমরা অনেক বছর ধরে অনেক ভেবেছি।  আমরা সত্যিই অনুতপ্ত।  ওরা ওদের কাছের মানুষকে হারিয়েছেন।  আশা করি, এই যন্ত্রণা থেকে কখনও ওরা মুক্তি পাবেন।’

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর এ দেশে আর থাকবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন নলিনী।

তিনি জানিয়েছেন, এবার ব্রিটেনে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে দেখা করবেন।  সেখানেই থাকবেন।  নলিনীর সঙ্গে যাবেন তার স্বামী তথা রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় আরেক অপরাধী মুরুগানও।

প্রয়াত রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে চান না নলিনী।  সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘না, একদম দেখা করতে চাই না।’

রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী নলিনীসহ ছয়জনকে গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) মুক্তি দেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।  ৩১ বছর জেল খাটার পর নলিনীর সঙ্গে মুক্তি পান জয়কুমার, সন্তন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস ও রবিচন্দ্রন।

১৯৯১ সালের ২১ মে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের শ্রীপেরুমবুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন রাজীব গান্ধী।  এ সময় শ্রীলঙ্কার লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) এক সদস্যের আত্মঘাতী বোমা হামলায় রাজীব গান্ধী নিহত হন।  হামলাকারী ধানুসহ ১৬ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন।

রাজীব গান্ধী হত্যায় নলিনীসহ ধৃত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল।  ২০০০ সালে রাজীব গান্ধীর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপে নলিনীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।

২০০৮ সালে ভেলোর জেলে গিয়ে নলিনীর সঙ্গে দেখা করেন রাজীব গান্ধীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।  পরে তিনি ও তার ভাই রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, বাবার হত্যাকারীদের তারা ক্ষমা করে দিয়েছেন।

২০১৪ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার হস্তক্ষেপে বাকি ছয় অপারাধীরও সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমে যাবজ্জীবন হয়।  দেশটির সর্বোচ্চ আদালত গত মে মাসে আসামি পেরারিভালানকে মুক্তি দেন।  আর এখন বাকিরাও মুক্তি পেলেন।