জুলাই-আগষ্ট/২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তী পালণে বেনাপোলে “আমার চোখে জুলাই বিপ্লব” আইডিয়া প্রতিযোগীতার উদ্বোধণ করা হয়। যশোর জেলা পরিষদ কর্তৃক আয়োজনে এবং শার্শা উপজেলা পরিষদ এর নির্বাহী তত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সোমবার(২৮ জুলাই) বেলা ১২ টার দিকে বেনাপোলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ “বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়” প্রাঙ্গণে বেলুণ উড়িয়ে প্রতিযোগীতার শুভ উদ্বোধণ ঘোষনা করা হয়। উদ্বোধণ ঘোষনা করেন শার্শা উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত বীর শহীদ আব্দুল্লাহ’র নামে একটি গাছের চারা রোপণ করা হয়।
উদ্বোধণকালে উপস্থিত ছিলেন,জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের লড়াইয়ে বেনাপোল ও বৃহত্তর শার্শা উপজেলায় ছাত্র-জনতার নেতৃত্বদানকারী,বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান,বীর শহীদ আব্দুল্লাহর পিতা-আব্দুল জব্বার,ঐ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, শার্শা উপজেলার সাবেক ছাত্রদল সভাপতি ও শার্শা যুবদলের আহবায়ক,মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম,বেনাপোল পোর্টথানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) রাসেল মিয়া,ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-আহসানুল কবির তুহিন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেনাপোল পৌর শাখার সাবেক আহবায়ক-আব্দুল্লাহ আল গালিব,সদস্য সচিব-সাজেদুর রহমান শিপু সহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলণকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
উদ্বোধণ শেষে আইডিয়া প্রতিযোগীতায় যে সকল বিষয় স্থান পায় সেগুলি হচ্ছে-কুইজ প্রতিযোগীতা,পথনাটক,জুলাই গনঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি,জুলাই এর খুনীদের বিচারের দাবীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি,জুলাই এর চিত্র প্রদর্শনী,আলোচনা সভা,জুলাই এর ডকুমেন্টারী প্রদর্শনী গ্রাফিতি। উদ্বোধণী ঘোষনা দিয়ে উপস্থিত জুলাই যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি ইউএনও ডা.কাজী নাজিব হাসান বলেন,আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার পর এখন তরুণদের, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে সবাই লড়াই করেছিলো, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। জুলাইয়ের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি’র সভাপতি ও শার্শা যুবদল আহবায়ক,মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন,‘এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে প্রথমে শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। এরপর জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে বিশেষ করে আবু সাঈদকে হত্যার পর কোটা বিরোধী আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে গণঅভ্যূত্থান ঘটিয়ে স্বৈরাচারি ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলে। এই আন্দোলনে বহু মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। বহু মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ যে বাংলাদেশ পেয়েছি সেখানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের চেয়ে অনেক স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। আজ বাংলাদেশের যে পরিবর্তন হয়েছে তা যেন স্থায়ী হয় সেই বিষয়ে আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান, জুলাই-আগস্টের চেতনাকে ধারণ করে আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়বো।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শার্শা এবং বেনাপোলে নেতৃত্বদানকারী সাবেক শিক্ষক আব্দুল মান্নান বলেন,শহীদ আব্দুল্লাহ’র প্রতি শ্রদ্ধা এবং সন্মাননা জানাতে “বেনাপোল পৌর স্বাগতম গেইট”টি শহীদ আব্দুল্লাহ’র নামে নাম করন করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত শার্শার ইউএনও’র প্রতি জোরালো আহবান জানান।