দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভবেই সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। গতকাল ৩০০ আসনে নির্বাচিত সাংসদরা শপথও গ্রহণ করেছেন। এসময় সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে পুনরায় সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে।
ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে নানাজন কথা বললেও এ কথা স্বীকার্য যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। কিন্তু দেশের ভেতর নাশকতাকারীরা তাদের হীন তৎপরতা অব্যাহত রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনীতির নামে নিষ্ঠুরতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রাজনীতির উদ্দেশ্য জনকল্যাণ। পৃথিবীর অনেক দেশেই মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করার বহু বিরল দৃষ্টান্ত রয়েছে। বাংলাদেশেও অতীতে রাজনীতির চরিত্র তেমনই ছিল। আমাদেরও অনেক নেতা ছিলেন, যাঁরা মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। রাজনীতির সেই চরিত্র আজ অনেকটাই বদলে গেছে। রাজনীতির সঙ্গে স্বার্থ জড়িয়ে গেছে। এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উদগ্র প্রতিযোগিতা হয়। অর্থ ও পেশিশক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। এমনকি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারার মতো নিষ্ঠুরতাও হয়।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ তাদের জীবন-জীবিকার কারণে বাধ্য হয়েই যানবাহনে বা ট্রেনে চলাচল করছে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছে। এই সাধারণ মানুষকে শিকারে পরিণত করে দাবি আদায়ের কৌশল বিকৃত মানসিকতার পরিচয় বহন করে। শুধু নাশকতার ওপর নির্ভরশীল রাজনীতির পরিণতি ভালো হতে পারে না। এতে অর্থনীতির ক্ষতি, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা সবই বিপর্যস্ত। যেসব কর্মসূচিতে জনগণের প্রাণ ও সম্পদের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকে না, সে ধরনের কর্মসূচি পরিহার করার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিশেষ পরিস্থিতিতে ইমার্জেন্সি (জরুরি) শাটল, ইমার্জেন্সি ট্রলি ও ইমার্জেন্সি টহলব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রেনকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম। এই তিনটি ব্যবস্থা কার্যকর থাকলে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনগুলোকে নাশকতার হাত থেকে রক্ষা করা অনেকটাই সম্ভব।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন এরকম নাশকতা আর না হয়, সবাই যেনো সমাজে নিরাপদে বাঁচতে পারে, সেজন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি সব সময়েই উঠেছে। তবে আগেও সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি বলে এসব হিংসাত্মক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। আমরা রাজনীতির নামে কোনো অবস্থাতেই এমন নৃশংসতা দেখতে চাই না। যেকোনো মূল্যে এ ধরনের নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে হবে। নাশকতাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।