ছাত্রদল নেতাকে ‘হত্যা’: চট্টগ্রামের সাবেক এসপিসহ তিনজনের নামে মামলার আবেদন

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে চট্টগ্রামের চন্দনপুরার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরদিন রাউজানে তার হাত-পা বাধা লাশ পাওয়া যায়। ঘটনার ৫ বছর পর পুলিশি হেফাজতে হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের তৎকালিন পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩ পুলিশ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ পুলিশ সদস্যকে আসামি করতে আবেদন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঞার আদালতে এ আবেদন করেন মো. মিজানুর রহমান নামে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা।

মামলার আবেদনে অন্য দুই আসামি হলেন, রাউজান থানার নোয়াপাড়ার সাবেক ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. জাবেদ ও রাউজান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কেফায়েত উল্লাহ। এর মধ্যে নুরে আলম মিনা এখন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার।

বাদীর আইনজীবী মাহফুজার রহমান ইলিয়াস বলেন, চকবাজার থানার চন্দনপুরা বাসা থেকে নুরুল আলম নুরুকে গ্রেপ্তার করে রাউজান থানার নোয়াপাড়ার কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে গিয়ে রাত তিনটা পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়।

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদনটি করা হয়েছে। ওই আবেদন মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে কি না, আদালত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।

ঘটনার ৫ বছর পর কেন মামলা দলীয় কোন নির্দেশনা আছে কি না জানতে চাইলে বাদীর আইনজীবী বলেন, যে সব পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার সাথে জড়িত ছিল তারা আশেপাশে এলাকায় কর্মরত ছিল। যার কারণে সে সময়ে যদি মামলা হতো তাহলে বাদী বা নিহতের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় থাকতো। যার কারণে এতদিন মামলাটা করা হয়নি। আর পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করাটাও সাধারণ জনগণের পক্ষে কঠিন।

মামলার আবেদনে বলা হয়, নগরের চকবাজার থানার চন্দনপুরা এলাকার বাসা থেকে নুুরুল আলম নুরুকে ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাত ১২টায় পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন ৩০ মার্চ সকালে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া খেলারঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে নুরুল আলম নুরুর হাত-পা নাইলনের দড়ি বাঁধা অবস্থায় মরদেহ পাওয়া যায়।

শার্ট দিয়ে চোখ ও ওড়না দিয়ে তাঁর মুখ বাঁধা ছিল। তাঁর মাথায় দুটি গুলির চিহ্ন ছিল। চন্দনপুরা বাসা থেকে নুরুল আলম নুরুকে রাউজান থানার নোয়াপাড়ার কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে গিয়ে রাত তিনটা পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে মামলার আর্জিতে জানানো হয়েছে।