চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের ধারণক্ষমতা ১২০ শয্যা। তবে বিভাগটি ঘুওে দেখা যায় ১২০ শয্যার বিভাগে রোগী ভর্তি আছেন ধারণক্ষমতার প্রায় তিনগুণ। তারমধ্যে এক তৃতীয়াংশ রোগীই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
এছাড়া কম নেই ডায়রিয়ার রোগীও। ঠিক একই অবস্থা চট্টগ্রাম মা-শিশু হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালেও।
শিশু স্বাস্থ্য বিভাগে শয্যা আছে ২২৫টি। এর বাইরে কিছু কেবিন আছে। প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার রোগী। আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল, চসিক পরিচালিত হাসপাতাল এবং নগরীর প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। কম নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন গুলোতেও।
চমেক হাসপাতালে রোগীদের চাপ বাড়ার কারণে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারেও অভিভাবকরা ভিড় করছেন শিশুদের নিয়ে।
চিকিৎসকরা জানান, নিউমোনিয়া হলো ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রের রোগ। সংক্রমণ এবং এর পরবর্তী প্রদাহ থেকে এ রোগ হয়। সংক্রমণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস ইত্যাদি দিয়ে। নিউমোনিয়ায় জ্বর থাকে, সঙ্গে কফ ও শ্বাসকষ্ট। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মৃত্যুর ১৮ শতাংশই হয় নিউমোনিয়ার কারণে। এ সময় আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে শিশুরা সর্দিজ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
চমেক হাসপাতাল শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সুপর্ণা দাশ বলেন, শীত মৌসুম শুরুর আগেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
চমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির।
তিন বছরের কন্যাকে নিয়ে চমেক হাসপাতালে আসা একব্যক্তি বলেন, ‘পাড়ার দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাইয়েছি। কিন্তু কমেনি। তাই এখানে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার বলছে-নিউমোনিয়া’।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, শিশু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে, শ্বাস নিতে অস্বস্তি হলে অভিভাবকদের দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। নবজাতক ও শিশুদের ধূমপানমুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ করে ভোরে ঠাণ্ডা পড়ার কারণে এবং অনেকে গরম কাপড়ে ঘেমে যাওয়ায় জ্বর-সর্দির প্রকোপ বেড়েছে। এতে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় শিশুদের বুকের দুধ এবং স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তাঁরা।