আজ ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর। ঐতিহাসিক নানা ঘটনার ৪৭তম বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানসহ নানা ঘটনা ঘটে। ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলির মধ্যদিয়েই জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পথ তৈরি হয়। এর আগে ঢাকা সেনানিবাসে বন্দি থাকা জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। সেদিনের ঘটনায় বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়।
দিনটিকে বিভিন্ন দল ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে থাকে। ৭ নভেম্বর বিএনপির ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’, জাসদের ‘সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ এবং আওয়ামী লীগের ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’।
৭ নভেম্বর ঘিরে রয়েছে নানা ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাত্র ৭৮ দিন পর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় চার জাতীয় নেতাকে। এসব হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ৩ থেকে ৭ নভেম্বর সামরিক বাহিনীর মধ্যে একাধিকবার অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে। এসব ঘটনাবলির মধ্যে গৃহবন্দি হন তৎকালীন চিফ অব আর্মি স্টাফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। ওইসব ঘটনায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ান নিহত হন।
৬ ও ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন বিপ্লবী গণবাহিনীর প্রধান কর্নেল (অব.) আবু তাহের বীরউত্তম। বন্দিদশা থেকে জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এরপরই দেশ চলে যায় সামরিক শাসনের অধীন। জিয়াউর রহমান প্রথমে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদে আসীন হন।
দিনটি উপলক্ষে বিএনপি নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে উন্মুক্ত আলোচনা সভা। দিবসটি উপলক্ষে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে দলটি।
জাসদ, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, কর্নেল তাহের সংসদসহ বিভিন্ন দল এবং সংগঠন জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, নেত্রকোনার কাজলায় কর্নেল তাহেরের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
জাসদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে রয়েছে কর্নেল তাহের বীরউত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং আলোচনা সভা।
আওয়ামীপন্থি সংগঠনের মধ্যে ’৭৫-এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা ও অফিসার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সমাবেশ, বিক্ষোভ, মানববন্ধন, শোক র্যালি ও শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।