একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাড়ে তিন বছর আগে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুই আসামি র্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন, যারা সাত বছর ধরে পলাতক জীবন কাটিয়ে আসছিলেন। এরা হলেন আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল ও জাছিজার রহমান খোকা। দুজনেরই বাড়ি গাইবান্ধায়। ওয়াহেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মুগদায় ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধরা পড়েন ওয়াহেদ মন্ডল। জাছিজারকে গ্রেফতার করা হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে।
র্যাব বলছে, ২০১৬ সালে গাইবান্ধা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন এই দুইজন। মৃত্যুদন্ডের রায় মাথায় নিয়ে ওয়াহেদ তাবলিগ জামাতের একটি দলে ভিড়ে নিয়মিত স্থান বদল করতেন। জাছিজার ঢাকাতে ঘন ঘন বাসা পাল্টেছেন। ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে ওয়াহেদ মন্ডল, জাছিজার রহমান, আব্দুল জব্বার, রঞ্জু মিয়া ও মোন্তাজ আলীর মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে তাদের নামে মামলা হয়। ২০১৪ সালে সেটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু বিচার চলাকালে নিয়মিত হাজিরা দিতেন না আসামিরা। ২০১৬ সালে জামিনের মেয়াদ শেষে নতুন করে জামিনের আবেদন করা হয়। সেটি নাকচ হলে পাঁচজনই যান আত্মগোপনে। ফেরারি জীবনে মারা যান আব্দুল জব্বার ও রঞ্জু মিয়া। এখনও পালিয়ে মোন্তাজ আলী। আবদুল জব্বার ছিলেন গ্রেফতার ওয়াহেদের বাবা।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ওয়াহেদের সংশ্লিষ্টতা ১৯৭০ সালে। একাত্তরে তিনি জামায়াতের গাইবান্ধা সদরের সদস্যসচিব ছিলেন।