পটুয়াখালীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক গৃহবধূ প্রাণ হারিয়েছেন, নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে যার গায়ে আগুন দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। গৃহবধূর পাঁচ মাস বয়সি শিশুপুত্রও দগ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দুমকি থানার ওসি আবুল বাশার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে দুমকি উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় এ নারীর অগ্নিদগ্ধ হন। শুক্রবার (৯ জুন ) বিকেল ৪টার ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত হালিমা আক্তার মীম (২০) দুমকি উপজেলার সাতানী গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে। তার স্বামী জামাল হোসেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকয় একটি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেটর। এ ঘটনায় মীমের শ্বাশুড়িসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ওসি আবুল বাশার জানান, মুখোশ পড়া দুই দুর্বৃত্ত বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে তাদের বাসায় ঢোকে। এ সময় ৫ মাস বয়সি ছেলেকে নিয়ে বাসায় ছিলেন মীম। দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে মীমের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে চলে যায়। মিমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা গিয়ে দরজা খুলে শিশু ও মীমকে উদ্ধার করে।
ওসি জানান, মীমকে প্রথমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মীমের মৃত্যু হয়েছে। মীমের ছেলের মাথার ৬ ভাগ দ্বগ্ধ হয়েছে। তবে সে আশঙ্কামুক্ত। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মীমের শাশুড়ি পিয়ারা বেগমসহ অজ্ঞাত পরিচয় চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মীমের মামা মো. ওমর ফারুক। কী কারণে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে এবং কারা জড়িত সেই বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
নিহত হালিমার স্বামী জামাল হোসেনের বরাত দিয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাশার আরো জানান, তাঁদের পারিবারিক বিরোধ ছিল। এ জন্য কিছুদিন আগে ঘর ভাড়া করে আলাদা থাকা শুরু করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।
দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম মতুর্জা বলেন, ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখোশ পরা দুই জন দৌড়ে পালাচ্ছে। কারা ও কেন ঘটনা ঘটিয়েছে জানি না। তিনি আরও বলেন, মীমের সঙ্গে তার শাশুড়ির বনিবনা ছিল না। ইউপি সদস্যকে দিয়ে সালিশ করিয়ে দুই জনকে আলাদা থাকার সিদ্বান্ত দিয়েছি। তারা দুমকিতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকত। মীমের স্বামী প্রিন্সের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি বলেন, কী হয়েছে আমি বলতে পারি না। আমি সুস্থ হই, তারপর বলব।