গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

রাজশাহীর বাঘায় বিয়ের এক মাস পর সাগরিকা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টায় গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তাবে সাগরিকার পরিবারের দাবি যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাকে।

নিহত সাগরিকা আক্তার নাটোরের বাগাতিপাড়া থানার উল্লাস গ্রামের আব্দুল গাফফার এর মেয়ে। স্বামী জার্মান হোসেন উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামের নওশাদ হোসেনের ছেলে।

শ্বশুর বাড়ির পরিবারের পক্ষ থেকে গৃহবধূ সাগরিকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানানো হলেও সাগরিকার পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে পারিবারিকভাবে জার্মান হোসেনের সাথে সাগরিকার বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের সময় জার্মান হোসেনকে সাগরিকার পরিবারের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়। যার মধ্যে নগদ ৫০ হাজার টাকা বিবাহের সময় প্রদান করেন। পারিবারিক সমস্যা ও অভাব অনটনে থাকায় বাকি ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য চার মাসের সময় নেন সাগরিকার বাবা। কিন্তু সাগরিকার স্বামী জার্মান হোসেন নেশাগ্রস্ত হওয়ায় উক্ত টাকা ১৫ দিনের মধ্যে খরচ করে ফেলে এবং বাকি ৫০ হাজার টাকার জন্য সাগরিকাকে চাপ সৃষ্টি করে ও নির্যাতন করে। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়।

গতকাল শুক্রবার রাতে সাগরিকা অসুস্থ হলে তাকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে বলে তার পরিবারকে সংবাদ দেন জার্মান হোসেন। পরে সাগরিকার বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজন পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সাগরিকার মরদেহ দেখতে পান।

নিহত সাগরিকার বাবা বলেন, ‘যৌতুকের ৫০ হাজার টাকার জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হচ্ছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

এ বিষয়ে নিহতের স্বামীসহ তার পরিবারের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সোয়েব খান জানান, পুঠিয়া থানা থেকে আমাদের সংবাদ দেওয়া হয়। নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। মামলার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।