ঢাকার সাভারে চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু গৃহকর্মীকে ছোট ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতনসহ অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগে দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন। এর আগে আজ দুপুরে নির্যাতিত শিশুকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- সাভারের রাজাশন এলাকার কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ। কাজী ইসমাইল ৪২ তম বিসিএস ক্যাডার ও বরগুনা সদর হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে দুপুরে নির্যাতনের শিকার শিশুর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী শিশুর নাম মিম (১০)। সে সাভারের রাজাশন এলাকার ভাড়াটিয়া আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। তারা সাভারের বিরুলিয়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের পূর্ব পরিচিত। এই সুবাদে মিমকে গৃহকর্মী হিসাবে কাজে নেয় আটকরা। কিন্তু গত ১ বছর কাজ করার পরেও ঠিকমত বেতন প্রদান করে নি। সেই বেতনের টাকা চাইলে শিশুকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনের বিষয়টি শিশুর পরিবার যাতে না জানতে পারে সে জন্য পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য করে ওই দম্পতি। পরে গতকাল ভুক্তভোগী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করে ভয়ভীতি দেখায় আটকরা। পরে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শিশুটিকে ভর্তি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী শিশু মিম বলে, আমি ওই বাসায় প্রায় ১ বছর ধরে কাজ করছিলাম। ওই বাসায় যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন আমাকে আদর করেছে। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরই আমাকে মারধর করতে থাকে। সর্বশেষ আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে ছোট সরু ছুরি দিয়ে সারা শরীরে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছে। এছাড়া ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করেছে।
এবিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ভুক্তভোগীর সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন ভোতা এবং ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
এব্যাপারে সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। তারা প্রাথমিকভাবে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।