গুহা’ ছেড়ে ঝটিকা মিছিলে রিজভী, বললেন সরকার ‘দিশেহারা

‘গুহা থেকে ব্রিফিং’ করে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করে আসা দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে এবার দেখা গেল ঢাকার রাস্তায় ঝটিকা মিছিলে।  বিএনপির ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খিলগাঁওয়ের তালতলা পল্লীমা সংসদের কাছে জনা ত্রিশেক নেতাকর্মী নিয়ে মিছিলে নামেন রিজভী। তার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি বক্তব্যও দেন। রিজভী বলেন, “সারাদেশে নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। এত নিপীড়ন-নির্যাতনের পরেও বিএনপির অবরোধ কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতি দেখে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়েছে, সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, নেতারা আবোল তাবোল কথা বলছেন। “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, দমন পীড়ন করে বিএনপিসহ বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমানো যাবে না, নেতাদের গ্রেপ্তার করে, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে নেতা-কর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না। নির্যাতন যত বাড়ছে, নেতা-কর্মীরা ততবেশি শক্তিশালী হয়ে রাজপথে নেমে আসছে।” গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের পর হরতাল ডাকেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর অবরোধের যে ঘোষণাগুলো এসেছে, তা দিয়েছেন আত্মগোপনে থাকা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। বিষয়টি নিয়ে টিপ্পনি কেটে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন ‘গুহা থেকে ব্রিফিং’ চলছে। রোববার অজ্ঞাত স্থান থেকেই আরেক ব্রিফিংয়ে এর জবাব দেন রিজভী। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিকামীরা আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল টিক্কা খান ওই ধরনের ‘হুঙ্কার’ দিতেন। সোমবার সকালে মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুকে আটকের নিন্দা জানান। রোববার গভীর রাতে দুদুকে তার বোনের বাসা থেকে পুলিশ ‘তুলে নিয়ে যায়’ বলে পরিবারের ভাষ্য।  রিজভী বলেন, “আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচিতে ভীত হয়ে সরকার শামসুজ্জামান দুদু ভাইয়ের মত সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। সারা দেশে গ্রেপ্তারের ঝড় বইযে দিয়েছে তারা। “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত এবং তার নেতৃত্বেই আন্দোলনের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। এবারের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সফল হবেই, সরকারের পতন অতি সন্নিকটে।” এই মিছিলে রুহুল কবির রিজভীসহ দলের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু, উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব এজিএম শামসুল হক ছিলেন। কিছু সময় মিছিলে থেকে রিজভীসহ নেতারা ওই এলাকা ত্যাগ করেন। এদিকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা আগের মতই রয়েছে। কলাপসিবল গেইটে তালা ঝুলছে। কার্যালয়ের সামনের ফুটপাত সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুলিশ পথচারিদের ঘুরে যেতে বলছে। গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের মধ্যে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর গভীর রাত থেকেই বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশি পাহারা বসানো হয়। কলাপসিবল গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।