গুডস হিল ঘেরাও করবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড

সাকা পুত্র হুম্মাম কাদেরকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরের বাড়ি ‘গুডস হিল’ ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। যুদ্ধাপরাধীদের ‘শহিদ’ সম্বোধন করে সাকাপুত্র বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বক্তব্য এবং মানবতা বিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের স্ত্রী-সন্তানদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াপ্তের দাবিতে ২৯ অক্টোবর এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। তবে এর আগপর্যন্ত হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে সময় দেয়া হয়েছে।

শনিবার (২২ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জেলা ও মহানগর শাখার পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেল। এসময় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম মহানগর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭১ সালে তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা যুদ্ধাপরাধী ফজলুল কাদের চৌধুরীর নির্দেশে তার বাড়ি ‘গুডস হিলকে’ টর্চার ক্যাম্প বানিয়েছিল পাকিস্তানি সেনারা, যাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ফকাপুত্র সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ রাজাকার-আলবদররা। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে ওই টর্চার ক্যাম্পে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হতো বলে সাকা চৌধুরীর মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষ্যে উঠে এসেছে।

১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। বক্তব্যে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়ি ফিরতে পারবেন না। সকল শহিদদের কবরে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হবে।’

এর প্রতিবাদে গত ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সাতদিনের সময় বেঁধে দেয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। অন্যথায় গুডস হিল ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠনটির নেতারা।

এরপর শনিবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কুখ্যাত যুদ্ধাপারাধী সাকা চৌধুরীকে ‘শহিদ’ উল্লেখ করে হুম্মাম চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছে এটা সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান। হুম্মামের অঙ্গভঙ্গি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। এই আস্ফালনের জন্য হুম্মামকে ক্ষমা চাইতে সাতদিনের সময় দেয়া হয়েছে। যদি এর মধ্যে সে ক্ষমা না চায় তাহলে ২৯ অক্টোবর সকাল ১১টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা এবং মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ‘গুডস হিল’ ঘেরাও করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু, যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান সজিব ও মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এবং সদস্য সচিব কাজী রাজিশ ইমরান।