খুলনায় গণসমাবেশ ঘিরে সরকার মূলতঃ ‘সান্ধ্য আইন’ জারি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এটা নজিরবিহীন ও কলঙ্কজনক।
শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকারের নির্দেশেই আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু জনতার ঢলে পরিপূর্ণ এখন খুলনা শহর।জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে সকল চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে গণসমাবেশে যোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে সমাবেশের দু’দিন আগে সড়ক পরিবহন ও লঞ্চ ধর্মঘট শুরু হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ, রোগী, পরীক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) থেকে ফেরি ও নৌ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সমাবেশে যাতে লোক সমাগম না হয়, তার সকল চেষ্টাই করে যাচ্ছে সরকার। চেকপোস্টসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, সরকারের এই অপকৌশলে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়লেও জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা অদম্য উৎসাহ-উদ্দীপনায় সমাবেশস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে।
বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুলনায় যে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন সেই বাড়ির লোকজনসহ প্রায় ১৯ জনকে আটক করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরা থেকে বাসযোগে সমাবেশে আসার পথে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫০ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বাগেরহাট থেকে আসার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারী একটি ট্রলার আটকে দিয়েছে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা’।
সব বাধা উপেক্ষা করে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশকে সফল করতে প্রবল আনন্দ-উদ্দীপনায় খুলনা সোনালী ব্যাংক চত্বরে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, সাতক্ষীরাসহ বিভাগের জেলাগুলো থেকে চিড়া-মুড়ি-গুড়-পানি-বিছানা নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছে মানুষ। পথে অনেকেই খবরের কাগজ কিংবা চাদর বিছিয়ে রাত্রি যাপন করেছে, এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য- যোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ ও ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।