আগামী ৭ নভেম্বর সারাদেশে ১০০টি সেতু একসাথে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিনি এসব সেতু উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এই ১০০টি সেতুর মধ্যে ৪২টি সেতুই চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ২৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ছোট-বড় এসব পাকা সেতু নির্মাণ করেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, আগামী ৭ নভেম্বর সারাদেশের ১০০টি নবনির্মিত সেতুর সাথে খাগড়াছড়ি জেলায় নির্মিত ৪২টি সেতু ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জেলা সদরের সাথে বিভিন্ন উপজেলা ও সমতল জেলা সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে আশির দশকে নির্মিত অস্থায়ী বেইলি ব্রিজগুলো সরিয়ে ৪২টি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুগুলো নির্মাণের ফলে পাহাড়ের সড়ক যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন আসবে। নিরাপদ হবে যাতায়ত ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সড়কে পিসি গার্ডার সেতু, আরসিসি সেতু ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৩৮ কোটি ২৪ লাখ টাকায় ৪২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুটি হচ্ছে দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কের লোগাং সেতু। ১৪৩ দশমিক ৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতুটি মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ি সড়কে ধুরুং খালের ওপর নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
এছাড়া বাকি সেতুগুলো হচ্ছে, দিঘীনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কে ৭৯.০৫ মিটারের পুজগাং বাজার সেতু, মাটিরাঙ্গা-তানাক্কাপাড়া সড়কের ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের গোমতী সেতু, মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ি সড়কে ৪৪.২ মিটার দৈর্ঘ্যের জুর্গাছড়ি সেতু, খাগড়াছড়ি-ঢাকা মহাসড়কের রামগড়ের সোনাইপুল সেতু, দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কে ৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের পাবলাখালী সেতু, একই সড়কে ৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঘাইছড়ি সেতু, ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাবুরোপাড়া সেতু, খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কে ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের পেরাছড়া ব্রিজ, একই সড়কে ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের গাছবান ব্রিজ, ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের কুকিছড়া ব্রিজ, ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের কুরাদিয়াছড়া ব্রিজ, একই দৈর্ঘ্যের লতিবানছড়া ব্রিজ, একই দৈর্ঘ্যের হাটহাজারি-মাটিরাঙ্গা সড়কের খাগড়াপুর ব্রিজ, রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি সড়কে ঠাকুরছড়া ব্রিজ, মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ির হাতিছড়া সেতু, জালিয়াপাড়া-মহালছড়ি সড়কের সিন্দুকছড়ি সেতু ও পঙ্খিমুড়া সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও রয়েছে- দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং সড়কের দেওয়ানছড়া সেতু, বাঘাইহাট-মারিশ্যা সড়কের পতেঙ্গাছড়া সেতু, একই সড়কে নাকাপা সেতু, দীঘিনালা-বাবুছড়া সড়কের জারুলছড়ি সেতু, মহালছড়ির চোংড়াছড়ি সেতু, একই সড়কে মুসলিমপাড়া ব্রিজ ও হেঁয়াকো-রামগড়-জালিয়াপাড়া সড়কে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্যের পাতাছড়া সেতু।
জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়কে ২৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ধুমনীঘাট সেতু ও যৌথখামার সেতু, দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং সড়কে ২৮ মিটার দৈর্ঘ্যের বড়পেরা সেতু, খাগড়াছড়ি পানছড়ি সড়কে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ছোটনালা ব্রিজ, লক্ষীছড়ি সড়কে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের মগাইছড়ি সেতু, পানছড়ি সড়কে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের লোগাং বাজার সেতু, দীঘিনালার বুজ্যেনাল সেতু, মগমারাছড়া সেতু, খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কের ২২ মিটার দৈর্ঘ্যের পাকুজ্জাছড়ি ব্রিজ, মানিকছড়ি সড়কে ২২ মিটার দৈর্ঘ্যের দুল্লাতলী সেতু, পানছড়ি সড়কের ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ভাইবোনছড়া ব্রিজ ও কলাবাগান ব্রিজ।
এছাড়া, মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি ও তাইন্দং ২টি সেতু, খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কে ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের কৃষি গবেষণা সেতু ও দীঘিনালা সড়কের হাতিমারা ছড়া সেতু।
সেতুগুলো খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে বলে আশাবাদী খাগড়াছড়ির জনগণ। পর্যটনেও এসব সেতু গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।