সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কেনা নিয়ে বেশ জল ঘোলা করেছিলেন ইলন মাস্ক। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সেই মামলার দফারফা হওয়ার আগেই প্রতিষ্ঠানটি কেনার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছেন তিনি। টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের পরিচয় বদলেছেন। নিজের প্রোফাইলে লিখেছেন ‘চিফ টুইট’।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকট্রনিক গাড়ি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক বুধবার (২৬ অক্টোবর) ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানফ্রানসিসকোয় টুইটারের সদর দপ্তরে যান। সেখানে যাওয়ার একটি ভিডিও তিনি টুইটারে পোস্ট করেন। এতে দেখা যায়, হাতে একটি সিংক নিয়ে সদর দপ্তরে ঢুকছেন তিনি। এর ক্যাপশনে মজা করেই লিখেছেন, ‘আসুন, ডোবা যাক!’
টুইটার ইস্যুতে বুধবার আরও দুটি টুইট করেন ইলন মাস্ক। টুইটারের প্রশংসা করে একটি বার্তায় তিনি লিখেছেন, নাগরিক সাংবাদিকতার ক্ষমতায়নে টুইটার যা করেছে, তা একটি ভালো দিক। কোনো ধরনের পক্ষপাত ছাড়া সাধারণ মানুষ এতে খবর প্রকাশ করতে পারছেন। আরেক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, টুইটারের কিছু অসাধারণ মানুষের সঙ্গে আজ সাক্ষাৎ হলো।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইলন মাস্ক এক বিবৃতিতে জানান, তিনি টুইটার অধিগ্রহণ করছেন। ‘মানবতার স্বার্থেই’ তার এই পদক্ষেপ বলে বার্তা দেন তিনি।
টুইটারে বিজ্ঞাপন নীতি কী হওয়া উচিত, সে ব্যাপারেও বার্তা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। তার কথায়, বিজ্ঞাপন সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে, তা মানুষকে অনেক তথ্য পেতে সাহায্য করবে। অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন ‘স্প্যাম’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
ওয়াশিংটন পোস্ট-এর খবরে বলা হয়েছে, টুইটার কেনার পথে হাঁটছেন ইলন মাস্ক। এবার সত্যি প্রতিষ্ঠানটি কিনছেন তিনি। বুধবার টুইটার কার্যালয়ে গিয়ে তিনি এটিই ইঙ্গিত দিলেন, চলতি সপ্তাহেই এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে যাচ্ছেন। এজন্য তাকে গুনতে হবে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার।
এ বিষয়ে ইলন মাস্কের কাছের কয়েকজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এই অর্থায়ন সংগ্রহের কাজেও এগিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আদম বাদাওই বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমার ধারণা, শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) আমরা হয়তো ঘোষণা শুনতে পাব, টুইটার কিনেছেন ইলন মাস্ক।’
এদিকে এনডিটিভি জানিয়েছে, টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরাগ আগারওয়াল ও সংস্থার প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) নেড সিগালকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, টুইটার কিনতে গত জানুয়ারি থেকে তোড়জোড় শুরু করেন ইলন মাস্ক। এরপর মার্চের মাঝামাঝি তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার কিনে ফেলেন। এরপর টুইটার কেনার জন্য তিনি টেসলার শেয়ার বিক্রি করেন। পরে এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এলে আইনি জটিলতায় পড়েন তিনি। সেই ঝামেলা এখনো কাটেনি। তিনি এই প্রতিষ্ঠান না কিনলে তাকে জরিমানা গুনতে হবে। আর সেই জরিমানা এড়াতেই টুইটারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে চাইছেন ইলন মাস্ক।