কক্সবাজারের উখিয়ায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন খামারি ও স্থানীয় গৃহস্থ পরিবারগুলো প্রায় ২৫ হাজার ৫১০টি পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ হোসেন।
এ বছর উপজেলায় কোরবানি ঈদের জন্য পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪১৪টি৷ চাহিদার তুলনায় গবাদিপশুর সংখ্যা বেশি আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদে কোরবানি পশুর প্রস্তুত ২৫ হাজার ৫১০টি। তার মধ্যে ১৬ হাজার ১৯টি গরু ও মহিষ ১ হাজার ৮শ ৩৬টি ও ৬ হাজার ৫০২টি ছাগল এবং ১ হাজার ১৫৪টি ভেড়া রয়েছে। এসব পশু আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বিক্রয় করা হবে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে।
কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে ৫ হাজার ৯৫টি৷ ফলে, কোরবানির জন্য কোনো রকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই।
উখিয়া ছয়তারা এগ্রোর পরিচালক রেজাউল কবির জানান, আমার এগ্রোতে ১২৮ টি গরু বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে৷ আমার খামারের সবচেয়ে বড় গরুটির মূল্য ৬ লাখ টাকা। গতবছরের তুলনায় এবার গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। যেমন ভূষি, খুদ, চাল ও ভুট্টার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। যে কারণে গবাদিপশু পালনে হিমশিম খেতে হয়েছে আমাদের।
রত্নাপালং ইউনিয়নের খামারি আলাউদ্দিন জানান, চলতি বছর কোরবানে ৩০টি গরুর মধ্যে ২৫টি বিক্রি করবেন। আমার খামারে সবগুলো দেশি জাতের গরু। এগুলো ওজন করে বিক্রি করা হবে যাতে ক্রেতা চাহিদা অনুযায়ী নিতে পারে। পশুখাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় গরুর দাম বেশি রাখতে হবে।
উখিয়া গরু বাজারের পরিচালক আব্দুর রহিম বলেন, ইতিমধ্যে উখিয়া দারোগা বাজারের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাটে কোরবানির পশু কেনা-বেচা শুরু হয়েছে। এই বাজারে নিসন্দেহে সকাল থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত গবাদিপশু কেনা-বেচা করতে পারবেন৷
উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, উপজেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রতিটি গবাদিপশুর হাট বাজারে ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম সেবা প্রদান করা হবে। কোনো গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে৷
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ হোসেন জানান, এবারও চাহিদার চেয়ে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু প্রস্তুত আছে। যা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা। এবছর প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য উপজেলাভিত্তিক তালিকাভুক্ত খামারিদের সারা বছর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদে হাটে আগত ব্যবসায়ী ও খামারিরা যাতে নির্বিঘ্নে তাঁদের পশু বিক্রি করতে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার সার্বিক নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ও প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এবার কোরবানির প্রাণী প্রস্তুত আছে ২৫ হাজার ৫১০টি। এই ঈদে প্রাণীর সংকট পড়বে না। চাহিদার তুলনায় গবাদিপশুর সংখ্যা বেশি আছে ৫ হাজার ৯৫টি৷ এতে খামারি ও ব্যবসায়ী উভয়েই লাভবান হবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন জানান, ঈদুল আজহা সামনে রেখে নানা কৌশলে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধ পশু ঢুকতে না পারে সেজন্য বিজিবি সাথে বৈঠক করা হয়েছে৷ খামারিরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য সবধরনের প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে৷
তিনি আরও জানান, উখিয়াতে ৩টি স্থানীয় গরুর বাজার রয়েছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে কয়েকটি অস্থায়ী গরু বাজার বাসানো হবে৷ তবে সড়কে বাঁধা সৃষ্টি করে এমন কোনো অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হবে না। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো অস্থায়ী পশুর হাট বসালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।