ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী

রাজধানীতে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার উদ্যোগে সোমবার ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের ইমাম আন্জুমানের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির-বিএসপি চেয়ারম্যান, শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন্ আহমদ আল্-হাসানীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ নবী প্রেমিকদের অংশগ্রহণে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ হতে জশনে জুলুস বের হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এ সময় নবী প্রেমিক জনতার বিভিন্ন ইসলামিক হামদ, নাত ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজপথ। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অংশগ্রহণকারীদের হাতে কলেমা তৈয়াবা, জাতীয় পতাকা, আন্জুমানের পতাকা এবং নানা ধরনের বাণী ও শ্লোগান লিখিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়।

র‍্যালি পূর্ব বক্তব্যে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, পৃথিবী থেকে অন্ধকার অনাচার ব্যভিচারসহ মানবতা বিরোধী অপরাধ দূর করতে আলোর মশাল নিয়ে শুভাগমন করেন বিশ্ব মানবতার ত্রানকর্তা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.)। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের যুগে নারী জাতির কোন মর্যাদা ও অধিকারই ছিলনা। মহানবী (দ.) নারী জাতিকে মর্যাদা ও শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনিই পৃথিবীতে সাম্য মৈত্রী সুবিচার এবং সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। তাই মহানবীর (দ.) এই দুনিয়ায় শুভাগমন সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ নেয়ামত ও অনুগ্রহ।

তিনি আরো বলেন, ইসলাম ধর্মেই জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সুখ সমৃদ্ধি শান্তি কামনা করা হয়েছে। এমন কোন কাজ করতে বলা হয়নি যাতে করে ইসলামের অবমাননা করা হয়। কোরআনে বলা হয়েছে কারো ওপরে জোর জবরদস্তি করে যেন ধর্ম চাপিয়ে দেয়া না হয়। কারো ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন বিনষ্ট না হয়।

তিনি বলেন, আমরা সুন্নি সূফিবাদী জনতা নবী প্রেমিক উদার মুসলিম। আমরা উগ্রতা ও হটকারীতায় বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি ইসলাম কায়েম হয়েছে উদারতায়। সূফী সংস্কৃতি ও মাজারসমূহ হলো ইসলামের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক। তাই যারা অলি আউলিয়ার মাজার, খানকাহ, দরগাহ শরীফে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করছেন, আপনারা এই গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকুন।

এছাড়াও তিনি বলেন, আমরা অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি আর যেন উগ্রবাদীরা দেশের একটি মাজারেও হামলা করতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। যে সমস্ত মাজার, খানকাহ ভাঙ্গা হয়েছে সেগুলো পূন:নির্মান ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা এই অন্যায়ের সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যার যার মতকে প্রাধান্য দিন। কারো ভিন্ন মতের উপর জুলুম কিংবা জোর জবরদস্তি থেকে বিরত থাকুন।

সমাবেশে মূফতী মাওলানা মাকসুদুর রহমানের সঞ্চালনায় অতিথি ও আলোচক ছিলেন শাহ্জাদা সৈয়দ মাহবুব-এ-মইনুদ্দীন, শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. শহীদ মনজু, আন্জুমান সহ-সভাপতি কবির চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক খলিফা মো: আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা মূফতী খাজা বাকীবিল্লাহ আল-আযহারী, মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি মহাসচিব অ্যাড আব্দুল আজিজ সরকার, অতিরিক্ত মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ প্রমূখসহ সাজ্জাদানশীন পীর, ওলামা-মাশায়েখ, আন্জুমান ও মইনীয়া যুব ফোরামের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।