আ.লীগ সরকারের নতুন চমক এমআরটি লাইন-৫

সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসা আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকার পরিবহন সেক্টরকেও আমুল বদলে দিচ্ছে। এক সময় মেট্রোরেলের সুবিধায় আসবে ঢাকার সব প্রান্ত। এর অংশ হিসেবে উত্তরা-মতিঝিল অংশের এমআরটি লাইন-৬ এর পর এবার এমআরটি লাইন-৫ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই লাইনের প্রাথমিক বিস্তৃতি হবে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান।

শনিবার (৪ নভেম্বর) এই অংশের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে আগারগাঁও স্টেশনে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের মেট্রোরেল চলাচলের উদ্বোধন করবেন তিনি। উদ্বোধন শেষে মেট্রোরেলে চড়ে তিনি মতিঝিল আসবেন। সেখানে মতিঝিলের আরামবাগে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় আগারগাঁও স্টেশন থেকে আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করবেন। তারপর মতিঝিল স্টেশনে আরেকটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য তিনি মেট্রোরেল নিয়ে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।’

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এম এন এ সিদ্দিক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন। এই লাইন হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা হয়ে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার হবে। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে।

তিনি বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে আগামীকাল শনিবার উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নিয়মিত মেট্রো চলাচল বন্ধ থাকবে। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া আপাতত আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে তিনটি স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল সেকশনের দৈর্ঘ্য ৮.৭২ কিলোমিটার। ফার্মগেট-সচিবালয়-মতিঝিল স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে। উত্তরা-মতিঝিল রুটে ৫ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে বলে মন্ত্রী জানান।

মেট্রোরেল সকাল সাড়ে ১১টার পর মতিঝিল-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে এবং উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে বলেও জানান তিনি। জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১.১৬ কিলোমিটার পথ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বর্ধিত অংশ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে। প্রতিটি ট্রেন ২ হাজার ৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্পের বিবরণে জানা গেছে। মেট্রোরেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে সহজ শতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। জাইকা প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে।