নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শহরের হকারদের ব্যাপারে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেহেতু আপনারই ছোট ভাই হকার বসিয়ে রেখেছেন।আমি যখন রাস্তায় নামবো তখন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে। আমি সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি শান্তিপূর্ণভাবে প্রশাসনকে নিয়ে, শহরের মানুষকে নিয়ে কীভাবে শহরকে পরিষ্কার রাখবো সেই অবদান রাখার জন্য। এতে আপনাদেরই সুনাম হবে, আপনাদেরই ভালো হবে। ২০ বছরে নগরীর মানুষ জানে আমি কী এবং কেমন, আমি চাইলেই কী করতে পারি। আপাতত আমি স্টপ থাকব।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দৃশ্যমান বর্জ্য শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ও অধিক প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গণসচেতনতামূলক র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ নগর ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচির আয়োজন করেন নগরীর ১৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস।
মেয়র আইভী বলেন, দুই নম্বর রেলগেট থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত ময়লা আর নোংরা পলিথিন। প্লাস্টিকে সারা নারায়ণগঞ্জ শহর সয়লাব। হাজার বলেও দখল উচ্ছেদ করতে পারিনি। কেন পারিনি তা জানেন। আমার ফুটপাত হকারের দখলে। মানুষ ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারে না। আপাতত আমি স্টপ থাকব। অপেক্ষায় থাকব আপনাদের জন্য। আপনাদেরকে নিয়েই আমি কাজ করতে চাই। ২০১৮ সালে হয়তো মরেই যেতাম, আজ আপনারা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতেন। শহরের হকাররা টাকা দেয় প্রশাসনকে, টাকা দেয় মাসলম্যানদের। কিন্তু ফুটপাত দিয়ে জনগণ হাঁটতে পারবে না কেন? প্রশাসন নিশ্চুপ কেন? যারা সংসদে গিয়ে বড় বড় কথা বলেন, তাদের নির্দেশে কেন আমাদের শহর এভাবে দখল করে নোংরা করবে। নারায়ণগঞ্জে সাধারণ মানুষ চুপ হয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত মানুষ যখন চুপ থাকে তখন সমাজের মধ্যে অপরাধ বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমার এখন ইচ্ছে করে ফুটপাত থেকে পলিথিনগুলো হকারদের সামনে থেকে কুড়িয়ে নিয়ে আসি। ওরা যে ফুটপাতে বিক্রি করে ওখানে কেন একটা ব্যাগ রাখে না? ওই ব্যাগের মধ্যেই তো পলিথিন রাখতে পারে। আমাদের জনপ্রতিনিধির নির্দেশেই তারা বসেছে। আমি ওই জনপ্রতিনিধিকে অনুরোধ করব, ভাই বহুত হইসে। এখন সব কিছু বাদ দিয়ে আসেন শহর ঠিক করি, শহরের মানুষের কল্যাণে কাজ করি।
এ সময় নগরের পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মেয়রের বক্তব্য শেষে একটি র্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের নগর ভবনে এসে শেষ হয়।